Connect with us

ফিচার

কুড়িগ্রামে হারিয়ে গেছে গ্রামীন জনপদের ঐতিহ্যবাহী হুক্কা

Published

on

শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম: কালে কালে বদলায় সমাজ হারিয়ে যায় অতীত ঐতিহ্য। কালের আবর্তে কুড়িগ্রামে হারিয়ে গেছে গ্রামীণ জনপদের বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনুসঙ্গ হুক্কা।
৫০/৬০দশকেও জনপ্রিয় ধুমপানের মাধ্যম ছিল হুক্কা। এক সময় বঙ্গদেশের কৃষক শ্রমিক বাড়ির ওঠোনে সকালে ও বিকালে কাজের ফাঁকে আয়েশি ভঙ্গিতে এক ছিলিম তামাকের সাথে নারিকেলের আশে আগুন ধরিয়ে তা ছিলিমে দিয়ে পরমান্দে হুক্কা টানতো। এতে কৃষকরা ক্লান্তি কেটে পরিতৃপ্ত পেতো। জমিদার জোতদার ও গ্রামের মোড়লরা নানা ভাবে তামাক তৈরী করে হুক্কায় টান দিয়ে পরম আনন্দে তৃপ্তির স্বাদ নিত।
অধিকাংশ শ্রমিকরা নিজের ক্ষেতের তামাক শুকিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে তাতে নালী মিশিয়ে ছিলিমে করে ধুমপান করতো।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের কুমারপাড়া গ্রামের যতিন চন্দ্র সরকার(৭০) তিনি একটানা ৪৫বছর ধরে হুক্কা দিয়ে ধুমপান করেন। তিনি বলেন, আগে গ্রামের সবাই হুক্কা টানতো। এখন হুক্কা ছেড়ে বিড়ি সিগারেট ও গাঁজা খায়। এই গ্রামে এখন আমি একাই হুক্কা টানি। হুক্কার নেশায় যারা অভ্যস্থ তারা হুক্কা ছাড়া থাকতে পারবে না। সকালে ঘুম থেকে ওঠে হুক্কার পানি বদলায়ে না খাইলে আমার পেট পরিস্কার হয় না। আমার হুক্কা আমি নিজেই তৈরী করি।
কিভাবে হুক্কা তৈরী করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঝুনা নারিকেলের একটা মালাই দুটো ফুটো করে তার উপর কারুকার্য করা একটি কাঠের নল তৈরী করে তাতে মাটির তৈরী ছিলিম বা কলকি দিয়ে নারিকেলের মালাই ভর্তি পানি ভরালেই হুক্কা হয়ে যায়।
আগের আমলে জমিদার জোতদারা পিতলের হুক্কা ব্যবহার করতো। এখন সেই আয়েশি হুক্কার পরিবর্তে গ্রামীন জনপদের পাওয়া যাচ্ছে মদ গাঁজা ফেন্সিডিলসহ নানান জাতের মাদক।
ভিতরবন্দ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল আলম জানান, হুক্কা একসময় গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ধুমপানের মাধ্যম ছিল। এখন তা আর চোখে পড়ে না। আমার জানা মতে বিড়ি-সিগারেটের চেয়ে হুক্কায় ধুমপান করতে ক্ষতি অনেক কম হয়।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *