কুড়িগ্রাম
ভুরুঙ্গামারীতে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে গম ক্রয়; বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা
জানাগেছে, চলতি মৌসুমে ভ‚রুঙ্গামারী উপজেলায় সরকারী ভাবে ৫৯৬ মে:টন গম সংগ্রহ করা হবে। বিধি অনুযায়ী উপজেলা কৃষি বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত গমচাষীদের নামের তালিকা থেকে লটারীর মাধ্যমে ৫৯৬ জন কৃষকের একটি তালিকা তৈরী করা হয়। কিন্তু দেখা যায় তালিকায় থাকা অধিকাংশ কৃষক গম চাষি নয়। আবার অনেকে ভুমিহীন ও ব্যবসায়ী। তালিকায় প্রকৃত গম চাষীদের নাম না থাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র ওই সকল ¯িøপ নাম মাত্র মূল্যে ক্রয় করে খাদ্য বিভাগের যোগসাজশে জয়মনিরহাট খাদ্য গুদামে গম জমা দিচ্ছে। জয়মনিরহাট খাদ্য গুদামে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিল এনে অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে এখানেও জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিল উত্তোলন করে নিচ্ছে তারা। এ ব্যাপারে গত বৃস্পতিবার উপজেলার ৫ ইউপি চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করে। শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন জানান, ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ শাহজাহান, অন্য ইউনিয়নের বাসিন্দা সেমিমা খাতুন, নুর ইসলাম, লিয়াকত আলী এরকম অনেকে গম চাষ না করলেও গম চাষীর তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। বঙ্গ সোনাহাট ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী জানান, গোলজার হোসেন, আব্দুল মালেক, আল আমিন, আব্বাস আলী ও আব্দুর রহিম ভুমিহীন এবং অনেকেই ঢাকায় কাজ করে। অথচ তালিকায় এসব ব্যক্তির নাম রয়েছে। তিনি জানান, উপজেলার সবচেয়ে ছোট ইউনিয়ন চর ভ‚রুঙ্গামারীতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৯০ মেঃটন। ভ‚রুঙ্গামারী সদরের খাদ্য ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম জানান, সরকারী ভাবে ১১২০ টাকা প্রতিমন গম ক্রয় করা হলেও গমের বর্তমান বাজার দর প্রায় ৭২০ টাকা। বাজার দরের এই তারতম্যের কারনে কৃষি বিভাগের যোগসাজশে একটি চক্র গম চাষি নয় এমন তালিকা ব্যবহার করে তাদের নামে সরকারী ভাবে গম জমা দিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার জয়মনিরহাট সরকারী খাদ্য গুদামে উপস্থিত হয়ে গম জমা দিচ্ছে এমন কৃষকের নাম জানতে চাওয়া হলে ওসিএলএসডি বেলাল হোসেন, ইউসুফ আলী, মোহাম্মদ আলী ও লিয়াকত আলীর নাম জানালে সেখানে এদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, শিলখুড়ির গম ব্যবসায়ী আবু হানিফ এবং ভ‚রুঙ্গামারীর রিয়াজুল এসব গম জমা দিচ্ছে। উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অমূল্য কুমার সরকার জানান, গত ১৯ মে গম ক্রয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৯৮ মে:টন গম ক্রয় করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তালিকা অনুযায়ী গম ক্রয় করা হচ্ছে, গম জমা দানকারীরা গম চাষি না হলে এর দায়ভার কৃষি বিভাগকেই নিতে হবে। তিনি আরো জানান, গম ক্রয় বন্ধ রাখা হয়নি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ধীর চলো নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। এ রকম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাহারুল ইসলাম জানান, চেয়ারম্যানদের অভিযোগ পাবার পর ক্রয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গম চাষীদের দাবী গম কর্তনের সাথে সাথেই সরকারী ভাবে গম সংগ্রহ শুরু করা প্রয়োজন।