Connect with us

জাতীয়

ভিসা জটিলতায় ৪০ হাজার হজযাত্রী!

Published

on

চলমান ভিসা জটিলতা না কাটলে ৪০ হাজার হজযাত্রী বিপাকে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। মঙ্গলবার সকালে হজ ক্যাম্পে বিমান শ্রমিক লীগের (সিবিএ) হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বিমান বাংলাদেশ হজযাত্রী পরিবহনে শতভাগ প্রস্তুত হলেও ভিসা না পাওয়ায় তাদের (হজযাত্রীদের) পরিবহন করতে পারছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে ফ্লাইট বরাদ্দ নিয়ে। বাতিল হওয়া ফ্লাইটগুলোর জন্য বিমান আবেদন করেছে। সেগুলো পেলে সমস্যা হবে না। আর না পেলে ৪০ হাজার হজযাত্রীর হজ পালন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশ বিমানে ১৭৭টি ফ্লাইটের মধ্যে নয়টি হজ ফ্লাইট এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে। ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কারণে পরের দিকে বিমানে যাত্রী পরিবহনের চাপ বাড়বে। এছাড়া ৮৫ হাজার যাত্রীর পাসপোর্ট এখনও হাতে পায়নি হজ অফিস। টিকিট পেয়েও ভিসা জটিলতায় জেদ্দা যেতে পারেননি সাত হাজারের বেশি যাত্রী।’

এসব সমস্যা বিমানের নয়। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলোর জটিলতায় এ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত ভিসা পেয়েছেন ৪১ হাজার ৭১৪ জন।

বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে মাসব্যাপী বিমান শ্রমিক লীগের এ কর্মসূচীতে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব) ইনামুল বারী, বিমানের এমডি ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ, শ্রমিক লীগ (সিবিএ) সভাপতি মোঃ মশিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ভিসা জটিলতার ফলে হজযাত্রী সঙ্কটের কারণে এখন পর্যন্ত ১২টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বিমানের নয়টি, সৌদিয়ার তিনটি। এসব ফ্লাইটের যাত্রীরা বর্তমানে হজ ক্যাম্পে বেশ উৎকণ্ঠায় রয়েছে। হজযাত্রী মাহমুদ জানান, তার পরিবারের সবার ভিসা হয়েছে। কিন্তু ১১৩ জনের একটি হজ গ্রুপের ১৮ জনের ভিসা না হওয়া এজেন্সি নির্ধারিত দিনে তাদেরকে ফ্লাইট দেয়নি। এখন এজেন্সি বলছে বাকি ১৮ জনের ভিসা যেদিন হবে সেদিনই তাদের সবার ফ্লাইট একত্রে হবে।

এ বিষয়ে হজ অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম  বলেন, সৌদি সরকারের মোয়াল্লেম ফি ও গত দু’বছরের মধ্যে একাধিকবার হজ পালনকারীদের ওপর ২ হাজার রিয়াল অতিরিক্ত চার্জ ধার্য করায় এ সঙ্কট হয়েছে। এটা উতরানোর জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সৌদিতে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে। দু’একদিনের মধ্যে এ জটিলতা নিরসন ঘটবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এদিকে বিমান মন্ত্রীর আশঙ্কা অমূলক দাবি করে হাব মহাসচিব শাহাদত হোসেন তসলিম জনকণ্ঠকে বলেন, কিছু ফ্লাইট বাতিল হলেও এটা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। প্রতিবছরই হজের প্রথম দিকে কিছু ফ্লাইট নানা কারণে বাতিল হলেও পরে সেগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় পুষিয়ে নেয়া হয়। এবারও হয়তো একই সঙ্কট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিমান যদি অতিরিক্ত কিছু সøটের ব্যবস্থা করতে পারে তবে একজন হজযাত্রীও বাদ পড়বেন না।

এ বিষয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ বলেছেন, গত বছর ২০ টা ফ্লাইট বাতিল করার পর শেষের দিকে কিছু হজযাত্রী পাঠাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এ জন্য শেষ মুহূর্তে দেন দরবার করে সৌদি আরবের কাছ থেকে কিছু সøট এনে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছে। এবারও অতিরিক্ত কমপক্ষে ৪ হাজার হজযাত্রীর জন্য ১০ টি সøট আগেই নেয়া রয়েছে। দেখা যাক শেষের দিকে কি পরিমাণ সøট দরকার হয়।

বিমানের জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, ভিসা সমস্যার কারণেই মূলত যাত্রী সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এজন্য ২ আগস্ট পর্যন্ত বিমানের ১২টি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে।

হাব সাধারণ সম্পাদক তসলিম জানান, বাংলাদেশ থেকে এবার হজে যাচ্ছেন ১ লাখ ২৮ হাজার জন। তাদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ হাজার জনের মতো ব্যক্তিকে পুনরায় হজ করতে যাওয়ায় ২ হাজার রিয়াল (৪৪ হাজার টাকা) দিতে হবে। কিন্তু তার প্রভাব পড়ছে আরও অনেকের উপর। এক পরিবারের সদস্যরা সবাই মিলে যখন হজে যেতে চাইছেন, তখন একজনের জটিলতার অবসান না হওয়া পর্যন্ত অন্যরা যেতে চাইছেন না। ভিসার জন্য বাড়তি এই অর্থ হজ এজেন্সিগুলো দিতে চাইছে না; ফলে হজযাত্রীদের সঙ্গে তাদের এটা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। হজে যেতে যে বাড়তি ২ হাজার রিয়াল লাগবে, তা আগে জানা থাকলে সেই অনুযায়ী হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হত।

এখন সমাধান কী- প্রশ্ন করা হলে শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছি, তারা যেন বিজ্ঞপ্তি জারি করে সবাইকে জানিয়ে দেন যে এই টাকা যাত্রীকে বহন করতে হবে। তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় এখনও এই সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা দেয়নি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *