খেলাধুলা
২০ রানে পাকিস্তানের রুদ্ধশ্বাস জয়
রোববার ব্রিসবেনের গ্যাবায় ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৩৫ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ২ বল বাকি থাকতে ২১৫ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি আগের তিন ম্যাচে মাত্র একটি জয় পাওয়া জিম্বাবুয়ের। ২২ রানের মধ্যেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারায় তারা। মোহাম্মদ ইরফানের পরপর দুই ওভারে দ্বিতীয় স্লিপে হারিস সোহলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন চামু চিবাবা ও সিকান্দার রাজা।
তৃতীয় উইকেটে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ব্রেন্ডন টেইলরের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে মাসাকাদজাকে ফিরিয়ে ৫২ রানের জুটি ভাঙেন ইরফান। চতুর্থ উইকেটে শন আরভিনের সঙ্গে ৫৪ রানের আরেকটি ভালো জুটি উপহার দেন টেইলর। অর্ধশতকে পৌঁছেই ওয়াহাব রিয়াজের বলে উমর আকমলের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। টেইলরের বিদায়ের পরই দিক হারায় জিম্বাবুয়ে। একবার জীবন পেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি উইলিয়ামস। রাহাত আলির বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে আহমেদ শেহজাদের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
তৃতীয় স্পেলে ফিরে আবার আঘাত হানেন ইরফান। সলোমন মায়ারকে আকমলের গ্লাভসবন্দি করেন এই দীর্ঘদেহী পেসার। ৪০তম ওভারে তিন বলের মধ্যে ক্রেইগ আরভিন ও টাওয়ান্ডা মুপারিওয়াকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে জয়ের পথে নিয়ে আসেন ওয়াহাব। জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটসম্যানই সহজ ক্যাচ দেন আকমলকে। ৪ উইকেটে ১৫০ থেকে ১৬৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া জিম্বাবুয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা ও টিনাশে পানিয়াঙ্গারা।
নবম উইকেটে ৪৭ রানের জুটিতে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা করতে পারেননি চিগুম্বুরা ও পানিয়াঙ্গারা। ৪৭তম ওভারটি মেডেন নিয়ে জিম্বাবুয়ের কাজটা অনেক কঠিন করে ফেলেন শহিদ আফ্রিদি। পরের তিন ওভারে চমৎকার বল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন ওয়াহাব ও ইরফান।
পানিয়াঙ্গারার রান আউটে ভাঙে ৯.৫ ওভার স্থায়ী জুটি। পরের বলে চিগুম্বরা বিদায় নিলে শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। পাকিস্তানের ইরফান ও ওয়াহাব চারটি করে উইকেট নেন।এর আগে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি প্রথম দুই ম্যাচে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারা পাকিস্তানের। দ্বিতীয় ওভারেই নাসির জামশেদকে হারায় তারা।
টেন্ডাই চাটারার করা অফস্টাম্পের বাইরের বল পুল করতে গিয়ে রাজার তালুবন্দি হন জামশেদ। পরের ওভারে দারুণ এক বলে অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শেহজাদকে ব্রেন্ডন টেইলরের গ্লাভসবন্দি করেন চাটারা।
৪ রানে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারানো পাকিস্তান প্রতিরোধ গড়ে হারিস ও মিসবাহর ব্যাটে। তারা নিজেদের এতোই গুটিয়ে রেখেছিলেন যে, ১০ ওভারে ১৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে ৫৪ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান হারিস। তাকে বিদায় করে ১৬.২ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন রাজা। নেমেই দ্রুত রান তুলতে থাকেন আকমল। মিসবাহর সঙ্গে গড়েন ৬৯ রানের ভালো একটি জুটি। ১২.২ ওভার স্থায়ী বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি ভাঙার কৃতিত্ব উইলিয়ামসের। এক বল পর শহিদ আফ্রিদিকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে বিপদে ফেলেন বাঁহাতি স্পিনার উইলিয়ামস। ৩৫তম জন্মদিনে ব্যাটিংয়ে একটা লজ্জাই পেলেন আফ্রিদি। বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো শূন্য রানে আউট হলেন তিনি।
রানের গতি বাড়াতে শুরু থেকেই আক্রমাত্মক ব্যাটিং করা শোয়েব মাকসুদ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন ওয়াহাব। অধিনায়কের সঙ্গে ৪৭ রানের এক জুটি গড়ে দলের সংগ্রহ দুইশ’ পার করেন তিনি। চাটারার তৃতীয় শিকারে পরিণত হয়ে শেষ হয় ১২১ বলে মিসবাহর ৭৩ রানের লড়াকু ইনিংসটি। অধিনায়ক ফিরে গেলেও থামেননি ওয়াহাব। শেষ ওভারে অর্ধশতকে পৌঁছানো এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান দলকে নিয়ে যান আড়াইশ’ রানের কাছাকাছি। ক্যারিয়ার সেরা ৫৪ রানে অপরাজিত থাকা ওয়াহাবের ৪৬ বলের ইনিংসটি ৬টি চার ও ১টি ছক্কা সমৃদ্ধ। এই প্রথম অর্ধশতক পেলেন ম্যাচ সেরা ওয়াহাব। তার আগের সেরা ছিল অপরাজিত ৪৭ রান। ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার চাটারা।