দেশজুড়ে
লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থলবন্দরে সিলিকোসিস রোগে এক শ্রমিকের মৃত্যু
বৃহস্পতিবার (৫-মার্চ) ভোর সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা এলাকার ফজলুল হকের ছেলে আব্দুর রশিদ (৩২)। এ রোগে তিনিসহ এ পর্যন্ত মোট ৬৩ জন শ্রমিক প্রাণ হারালেন। গত বছর ২৫ ও ২৬ নভেম্বর নুরুজ্জামান(৩৫) এবং মজিবর রহমান(৪৮) নামের দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। একই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর দুলাল মিয়া(৩৯) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
নিহত আব্দুর রশিদের বাবা ফজলুল হক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘একেই তো পিতার ঘারে ছেলের লাশ, অপর দিকে এখন ইরা মনি(৭), মনিরা(৫) নামে দুই নাতনী ও শেফালি বেগম(২৫) ছেলের বউয়ের সংসারের ঘানি টানতে হচ্ছে।’
নিহত আব্দুর রশিদের সহকর্মী শ্রমিক মতিউল ইসলাম বলেন, ‘নিহত আব্দুর রশিদের শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে মারা যান। আমরা ১৪ জন শ্রমিক সিয়াম এন্টারপ্রাইজের পাথর ক্রাসার মেশিনে কাজ করেছিলাম। এরমধ্যে ১৩জনই মারা গেলে এখন আমিই শুধু ওই গ্রুপের একমাত্র সদস্য হিেেসবে বেঁচে আছি। আমিও অসুস্থ্য কবে মারা যাই কোনো ঠিক নেই।’
বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রশিদ বুড়িমারীতে অবস্থিত সিয়াম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি কারখানায় পাথর ক্রাসিংয়ের কাজ করতেন। প্রায় তিন বছর ধরে এ কাজ করে আসছিলেন তিনি। পাথর ক্রাসিংয়ের সময় উড়ন্ত ধুলা নাক-মুখ দিয়ে শরীরে ঢুকে সিলিকোসিস রোগের জন্ম দেয়। আব্দুর রশিদ ছাড়াও ছাড়াও আরো প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক এ রোগে আক্রান্ত হন। ঢাকার বিলস নামের একটি সংগঠন এসব রোগীকে সনাক্ত করে। বাংলাদেশের মধ্যে বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রথম এ রোগটি সনাক্ত করা হয়। এ পর্যন্ত ৬৩ জন সিলিকোসিস রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু আতঙ্কে রয়েছেন আরো প্রায় দেড় শতাধিক শ্রমিক।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর ২৫ নভেম্বর নুরুজ্জামান, ২৬ নভেম্বর মজিবর রহমান মারা যায়। ওই বছরের ২৯ সেপ্টেস্বর দুলাল মিয়া নামের এক শ্রমিক জাতীয় বক্ষব্যাধী হাসপাতাল থেকে আসার পর দিন মারা যান।