Connect with us

দেশজুড়ে

জিরা চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন কৃষক জিয়াউর রহমান

Published

on

Narail-  jiraনড়াইল প্রতিনিধি:
পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতেও জিরার চাষ হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন মসলা চাষাবাদ হলেও জিরার চাষ হয় এমন তথ্য কেউ দিতে পারে নি। দেশের চাহিদা মেটাতে ভারত, ইরানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে জিরা আমদানি করা হয়। তবে এবার নড়াইল পৌরসভার ডুমুরতলা গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান পরীক্ষামূলকভাবে ৬ শতক জমিতে জিরার চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন।
চাষী জিয়াউর রহমানের কাছে জিরার বীজ সংগ্রহের স্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার এক নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে মিশর থেকে একশ’ গ্রাম বীজ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়, ওই একশ’ গ্রাম বীজ তিনি ৬ শতক জমিতে বপন করেন। সেই থেকে শুরু, জিরার ফুল পেয়ে মৌমাছিরাও মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। মৌমাছির মধু সংগ্রহের পাশাপাশি পরাগায়নে সহযোগিতা করছে এসব মৌমাছি।
কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, জিরা নাতিশীতোষ্ণ এবং শুষ্ক আবহাওয়া জিরা চাষের জন্য আদর্শ আবহাওয়া। সুনিষ্কাশিত উর্বর, গভীর এবং বেলে দোঁআশ মাটি জিরা চাষের জন্য উত্তম। জিরার প্রধানত চার ধরনের জাত রয়েছে। তার মধ্যে লম্বা, বেঁটে, গোলাপী ও সাদা ফুল। গোলাপী ফুল জিরার ফলন অনেক বেশি হয়। ছিটিয়ে বীজ বপন করলে হেক্টর প্রতি ১২-১৫ কেজি বীজ এবং সারিতে মাদা করে লাগালে হেক্টর প্রতি ৮-১০ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। ফল ধরার সময়ে শুকনো এবং ঠান্ডা আবহাওয়া এবং ফল পুষ্ট হওয়ার সময়ে নাতিশীতোষ্ণ এবং শুষ্ক আবহাওয়া জিরা চাষের জন্যে আদর্শ।
জমি তৈরি করতে প্রথমে ৫-৮টি চাষ এবং মই দিয়ে জমি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। হেক্টর প্রতি ১০ মণ জৈব সার এবং শেষ চাষে ১ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি ফসফেট মূল সার হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে। এরপর বীজ বোনার ৩০ দিন পর একবার এবং ৬০ দিন পর আরো একবার ১ কেজি করে ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে। বীজ বোনার ২৫-৩০ দিন পর জমির আগাছা তুলে ফেলতে হবে এবং মাটি আলগা করে দিতে হবে। পরবর্তীকালে ২/৩ বার সেচ দিতে হবে। জাত অনুসারে ৯০-১১০ দিনের মধ্যে তোলা যায়। ভালভাবে চাষ করলে হেক্টর প্রতি ৮০০-১০০০ কেজি ফলন পাওয়া যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ আমিনুল হক বলেন, জিরা (ঈঁসরহ) এ্যাম্বেলিফেরি গোত্রের মসলা জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম (ঈঁসরহঁস পুসরহঁস)। জিরা জনপ্রিয় মসলা এবং রান্নাবান্না করা খাবার সুস্বাদু করতে জিরার তুলনা নেই। নড়াইল পৌর এলাকায় প্রথম বারের মত জিরা চাষ হচ্ছে। আমি নিজে সেখানে সরেজমিনে গিয়েছি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করেছি। ইতোমধ্যে বগুড়া থেকে একটি বীজ গবেষক দল এসেছিল তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে রিপোর্ট দিলে বোঝা যাবে আসলে জিরা কিনা। তবে আমি দেখে যেটা বুঝেছি এবং কৃষকদের কাছ থেকে যা শুনেছি দেখতে জিরার মত দেখা যাচ্ছে এবং ফলনও ভাল হয়েছে। সত্যি যদি জিরা হয় তা হলে এই কৃষককে দিয়ে আগামীতে একটি জিরা প্রদর্শনী করা হবে। এবং এই জিরা থেকে বীজ তৈরি করে এলাকার কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *