Connect with us

জাতীয়

শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দক্ষিণ বিশ্ব গড়তে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্তের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী

Published

on

1429711597 (1)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ পরবর্তী উন্নয়ন এজেন্ডার পটভূমিতে দারিদ্র্য ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইসহ ৩টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর ওপর গুরুত্বারোপ করে এশিয়া ও আফ্রিকার নেতৃবৃন্দকে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দক্ষিণ বিশ্ব (গ্লোবাল সাউথ) গড়ার লক্ষ্যে একত্রে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমরা সম্মিলিতভাবে এমন এক স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ে তুলতে পারবো-যা হবে নির্যাতন, অসহিষ্ণুতা, সহিংসতা ও চরমপন্থামুক্ত।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৫ উন্নয়ন এজেন্ডা পরবর্তী পরিবর্তনশীল করণীয় ও লক্ষ্যের রূপরেখা নির্ধারণ করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি ৩টি উন্নয়ন ইস্যুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রথমত ক্ষুধা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই, দ্বিতীয়ত সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা দমন এবং তৃতীয়ত ঘনিষ্ট ও দৃঢ় সহযোগিতা।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার সকালে বালাই সিদাং জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে দ্বিতীয় এশিয়ান-আফ্রিকান শীর্ষ সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের ভাষণে এ আহ্বান জানান। ৩ দিনব্যাপী এ সম্মেলন আজ শুরু হয়েছে।
টেকসই উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও নিরাপত্তা এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অস্থিতিশীল বিশ্ব নিরাপত্তা পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক উন্নয়নে অব্য্যহত ব্যাপক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এক্ষেত্রে তিনি সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম বা জাত নেই। যে কোন হিংসাত্মক কর্মকা-ে যে কোন ব্যক্তি ও সংগঠনকে আমাদের ভূমি ব্যবহার করতে না দেয়ার নীতিতে সকলকে অটল থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই এবং মানবপাচার রোধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমাত্রিক সহযোগিতার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অর্ধেক জিডিপি’র ধারক হচ্ছে দক্ষিণ। এখানে অর্থনৈতিক কর্মকা-ের অর্ধেক ও বিশ্ব বাণিজ্যের অর্ধেকেরও বেশি সাধিত হয়। এজন্য টেকসই উন্নয়ন ও দক্ষিণের দেশগুলোর স্বনির্ভরতা অর্জনে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ।
শেখ হাসিনা বলেন, ব্যাপক উন্নয়ন সত্ত্বেও বিশ্বের ২ দশমিক ২ বিলিয়ন মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। ৮শ’ মিলিয়ন মানুষ দীর্ঘমেয়াদী ক্ষুধায় ভুগছে এবং ২শ’ মিলিয়ন মানুষ জলবায়ুর প্রভাবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এ প্রেক্ষাপটে গণমুখী, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈশ্বিক উন্নয়নবান্ধব কৌশল নিশ্চিত করতে বিদ্যমান উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষিণের অর্থনীতিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ আগামী মাসে ঢাকায় ২০১৫ উন্নয়ন এজেন্ডা পরবর্তী পটভূমিতে উচ্চ পর্যায়ের এক দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমাত্রিক সহযোগিতার আয়োজন করছে। আমরা আশা করছি এতে আপনাদের সমর্থন, সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে উল্লেখিত সব বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হবে।
অভিবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, পৃথিবীতে এখন মানুষের চলাচল ও অভিবাসন নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। এসব কিছুকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার প্রধান চালিকা ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক দেশের অভিবাসী শক্তি অর্থনীতি ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখছে। এ খাতে আমাদের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ব্যাপক উন্নয়ন সুফল বয়ে আনতে পারে।
এ অঞ্চলে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় দুই মহাদেশের সকল দেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে তিনি জলবায়ু প্রভাব প্রশমনে তাঁর সরকার চাপ সহনশীল (খরা ও বন্যা) ফসলের জাত উদ্ভাবন ও নিজস্ব সম্পদে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা কোন একক দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি এ অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনে দৃঢ় অঙ্গীকারের আশায় তাকিয়ে আছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব দৃষ্টান্তমূলক উন্নয়নের ধারণার ভিত্তি হচ্ছে শান্তি ও উন্নয়ন। তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের, বিশেষত নারীদের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি, যা দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ উদাহরন দেয়ার মতো ভালো ফল করেছে, ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে কমে ২৪ শতাংশে হয়েছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *