ঠাকুরগাঁও
শিকলে বন্দি পীরগঞ্জের হালিমের জীবন
জাকির হোসেন, পীরগঞ্জ প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও : ১০ বছর বয়সে হঠাৎ করেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ঠাকুরগাও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার হালিম। এরপর চিকিৎসা করা হলে কিছুদিন সুস্থ থাকার পর আবার আগের মতো অসুস্থ হয়ে পরে। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে আর চিকিৎসা করা হয়নি তাঁর। হালিমের বয়স বর্তমানে ৩৫ বছর।তাঁকে পাঁয়ে শিকল পড়িয়ে রাখা হয়েছে গত ২ বছর থেকে।তাঁর মা হালিমা জানান,অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেনি।মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় গত ২ বছর থেকে সে এলাকাবাসীর বিভিন্ন লোকসান করে আসছে।কারো ছাগল হত্যা,কাউকে মারধর,অনেকের সবজি-ক্ষেত নষ্ট এবং তাঁর নিজের বোনকেও কিছুদিন আগে মাথায় আঘাত করেছে।এজন্যই তাঁর পাঁয়ে শিকল পরিয়ে রাখা হয়েছে।বর্তমানে ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার উত্তর গুয়াগাঁও (কলেজ পাড়া) গ্রামে তাঁর নিজ বাড়িতেই শিকল পাঁয়ে বন্দী জীবন পার করছে হালিম। সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়,টিনের চাওলার একটি ঘরে শিকল পাঁয়ে মাটিতে বসে আছে হালিম।শরীরে কোন কাপড় নেই। ৬ ভাই-বোনের মধ্যে হালিম সবচেয়ে বড়। তাঁর বাবা বজিরুল(৭০)প্যারালাইসিস এ আক্রান্ত হওয়ায় বর্তমানে পরিবারের খরচ চালাতে হচ্ছে তাঁর ছোট ভাই এরশাদকে। এরশাদ(২১) বলেন,আমি দিনমুজুর।দৈনিক ৩০০-৪০০টাকা কাজ করে পাই।বাবার প্যারালাইসিস হওয়ার পর দৈনিক ১৫০ টাকার ঔষুধ লাগে বাকি টাকা সংসারের খরচ এভাবেই কষ্টের মধ্যে চলছে আমাদের জীবন।অর্থের অভাবে ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না।আমার বাকি ভাইয়েরা আলাদা ভাবে সংসার করছে।পরিবারের সব খরচ এখন আমার কাঁধে।ছোট বোন ১০ শ্রেণীতে পড়ছে তাঁর পরীক্ষার ফি দিতে পারছি না। নানা সমস্যার মধ্যে দিন পার করছি। সরকারিভাবে আমাদের কোন ভাতাও দেওয়া হচ্ছে না। যদি কিছু সহযোগিতা পেতাম তাহলে ভাইয়ের ও বাবার চিকিৎসা,ছোট বোনের লেখাপড়ার খরচসহ পরিবারের খরচ চালাতে পারতাম।