Connect with us

দেশজুড়ে

বাঘায় ঈদে বাড়ে চোরাচলান, মাদকব্যবসা তৎপর বাঘা-চারঘাটের চোরাচালানীরা

Published

on

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, বাঘা:
এমনিতেই থামছেনা চোরাচালান ও মাদকব্যবসা। ঈদ এলে এর প্রসার বাড়ে ব্যাপক হারে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহীর বাঘা-চারঘাট উপজেলার চোরা-চালানীদের ‘পৌষ মাস’ চলছে। যার মহা উৎসব শুরু হয়েছে বাঘা-চারঘাট সীমান্ত এলাকার প্রায় ২৫টি সীমান্ত পয়েন্টে। প্রতিদিন এসব সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অবাধে ঢুকছে চোরাই ভারতীয় পণ্য। এসব পণ্য উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের হাট বাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন শহরাঞ্চলের মার্কেটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে দেদারছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ও সীমান্ত রক্ষীবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে চোরাচালান সংশ্লিষ্ট ঘাট মালিকদের পারস্পারিক বোঝাপড়ায় প্রতিবার ঈদকে সামনে রেখে এসব অঞ্চলে চোরাচালান বেড়ে যায়। স্থানীয় বাজার ছেয়ে যায় চোরাই ভারতীয় পণ্যে। প্রতি বছরের মত এবারও থেমে নেই চোরাচালানী সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ফলে দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে চোরাচালান ও মাদকব্যবসা।
জানা যায়, রাজশাহীর সীমান্তবর্তী চারঘাট কম্পানির অধীনে বাঘা-চারঘাট উপজেলায় ৫টি বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে। ক্যাম্পগুলোর অবস্থান- চারঘাট, মিরগঞ্জ, আলাইপুর, উদয়নগর ও চকরাজাপুর এলাকায়। এসব সীমান্তবর্তী এলাকার ইউসুফপুর, রাউথা, পিরোজপুর, মুক্তারপুর, গোপালপুর, মিরগঞ্জ, আলাইপুর, হরিরামপুর, কিশোরপুর, চৌমাদিয়া, চকরাজাপুর, ও উদয়নগরসহ ২৫টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন আসছে ভারতীয় শাড়ি কাপড়, নারী ও শিশুদের পোষাক, গার্মেন্টস সামগ্রী, প্রসাধন সামগ্রী, ইমিটেশনের অলংকার, ক্রোকারিজ, বহুমুখি সৌখিন দ্রব্য, পটকা, আতশবাজী, ও মসলা মটর পার্টস, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, পায়খানার প্যান, হাত ধোয়ার বেসিন। এছাড়া নেশা জাতীয় দ্রব্য ফেন্সিডিল, হিরোইন, মদ, গাঁজা, ইয়াবা যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, ভারতীয় নিম্নমানের ওষুধ। বাঘা-চারঘাটসহ পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলার সব চোরা-চালান ঘাট এখন ব্যস্ত।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব চোরাচালান পণ্যর মধ্যে বেশিরভাগ আটক হয় ফেন্সিডিলসহ অন্যান্য মাদক দ্রব্য। বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব যে পরিমান চোরা-চালান পণ্য আটক করেছে তার ৪০/৫০ গুনেরও বেশী পণ্য প্রতিদিন এসব সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আসছে। এলাকায় বাড়ছে মাদকব্যবসা। নিরাপদ স্থান হিসাবে এ ব্যবসার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে আম বাগান কিংবা বাঁশের ঝাড় প্রাঙ্গণ। আলাইপুর হাজাম পাড়া মোড়, পাকুড়িয়া ও কলিগ্রাম তালেবের মোড় এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক লোক এ ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। এদের মধ্যে আমিরুল, আফাজ, রফিকুল, সাদিক, কাল আমিরুল, সাজদার ঝন্টু, সিদ্দিকসহ বেশ কয়েক জনের নাম শোনা গেছে। প্রতিদিন মোটর সাইকেল, সাইকেল, ভুটভুটি কিংবা কার নিয়েও আসে বহিরাগত মাদকসেবিরা। তারা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ফেন্সিডিল,গাঁজা কিংবা অন্যকোন মাদক সেবন করে চলে যায়। রকসেদ নামের এক ব্যবসায়ী জানান, প্রশাসনের মধ্যস্থতাকারী সারেত ও আলতাফকে মাসিক মসোয়ারা দিয়ে এ ব্যবসা করতে হয়। উপজেলার কলিগ্রাম এলাকার বাক্কার জানান, এখন থেমে থেমে মাদক সেবিরা আসা-যাওয়া করলেও ঈদের মধ্যে এ এলাকা মাদকসেবীদের মিলনমেলায় পরিণত হবে। ব্যবসা বন্ধসহ যুব সমাজকে রক্ষার জন্য স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত স্মরণাপন্ন হয়েছেন এলাকার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম এমপির।
অভিযোগ প্রত্যাক্ষাণ করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দাবি করেছেন, তাদের অভিযানের ফলে চোরাচালন এখন অনেক কমেছে। তবে রাজনৈতিক কারনেই অনেক সময় ব্যবস্থা নিতে পারছেন না তারা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *