Connect with us

দেশজুড়ে

সেতুর অভাবে ২০ বছর ধরে সাঁকোতে পারাপার

Published

on

পিরোজপুর প্রতিনিধি:
প্রায় ২০ বছর ধরে একই স্বপ্ন বুনছে এলাকার মানুষ। নদের ওপরে সুদৃশ্য সেতু হবে। সেই সেতু দিয়ে পারাপার করবে গ্রামের মানুষ।
সেতুর প্রত্যাশায় কেটে গেছে দেড় যুগেরও বেশি। তবু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের। তাই বাধ্য হয়ে ৩০০ ফুট দীর্ঘ একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে তার ওপর দিয়ে পারাপার হচ্ছেন পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বরইবুনিয়া গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহমান বলেশ্বর নদের তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এর উপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে আশপাশের ৪টি গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ। বিশেষ করে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধদের সাঁকো পারাপারে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভোগ কৃষকদের। তাদের উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন বিড়ম্বনা।
নাজিরপুরের মাটিভাংগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ বি এম ফয়সাল আলম রঞ্জু বলেন, এই সাঁকোর স্থলে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে বার বার কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোনো ফল পাই নি।
১৩ জুলাই সরেজমিনে দেখা যায়, বলেশ্বর নদের পূর্ব দিকে মাটিভাংগা ইউনিয়নের বরইবুনিয়া, চর বরইবুনিয়া ও চর মাটিভাংগা গ্রাম। আর পশ্চিম দিকে বাগেরহাটের চিতলমারি উপজেলার চর বানিয়ারি ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়া গ্রাম। এই চার গ্রামের মানুষ সাঁকোটি ব্যবহার করে নদী পারাপার হয়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে বলেশ্বর নদ পারাপারের জন্য গ্রামবাসীর সহযোগিতায় মহর আলী নামে এক ব্যক্তি নদের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। এর আগে মহর আলী নিজেই খেয়া নৌকায় করে গ্রামবাসী ও বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের পারাপার করতেন। এজন্য প্রতিবছর গ্রামবাসীদের কাছ থেকে ধান তুলে মহর আলী। ওই তোলা ধান বিক্রি করে সাঁকো নির্মাণ ও মেরামত করেন তিনি।
দীর্ঘ সাঁকোটি অধিক ব্যবহারে জীর্ণ হয়ে গেছে। বাঁশ পুরানো হয়ে গেছে। কয়েক জায়গায় বাঁশ ভেঙেও গেছে। বৃষ্টির দিনে চলাচলে দেখা দেয় মারাত্মক ঝুঁকি। বরইবুনিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় মালাকার বলেন, বরইবুনিয়া গ্রামের দুইটি মাধ্যমিক ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে পড়তে নদের ওপারের চর ডাকাতিয়া গ্রামের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। এছাড়া বরইবুনিয়া, চর বরইবুনিয়া, চর মাটিভাংগা ও চর ডাকাতিয়া গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ নিত্য প্রয়োজনে এ সাঁকো দিয়ে চলাচল করেন।
ওপারের চিতলমারি উপজেলার চর ডাকাতিয়া গ্রামের কৃষক অনিমেষ মন্ডল (৪৫) বলেন, আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য পাশের শৈলদাহ, মাটিভাংগা ও তারাবুনিয়া বাজারে বিক্রির জন্য বরইবুনিয়া সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চলাচলে বেশ কষ্ট হয়।
এ বিষয়ে নাজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, অর্থ বরাদ্দ পেলে সাঁকোটির স্থলে পাকা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব।
নাজিরপর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম বলেন, তারা ওই স্থানে সেতুর ব্যাপারে এলজিইডিতে কাগজপত্র দিয়েছেন। তবে কবে সেতু হবে তা বলতে পারেন না।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *