দেশজুড়ে
ছিটবাসীদের উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : মসজিদে ও মন্দিরে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে ছিটবাসীদের উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর ২টায় কুড়িগ্রামের দাসিয়ার ছড়াসহ ১১১টি ছিটমহলে উৎসব পালনের এ অভিন্ন কর্মসূচী শুরু হয়েছে। ছিটবাসীদের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার।
বিকেলে নৌকা বাইচ, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীপ হুইপ ও কুড়িগ্রাম ২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্জ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি, বাংলােেদশ ইউনিটের সভাপতি মঈনুল হক, সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা। এছাড়াও দাসিয়ার ছড়া ছিট মহলের অধিবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বিরোধী দলীয় চীপ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ৬৮ বছর যাবৎ ছিটমহলের মানুষ লাঞ্চনা-বঞ্চনার মধ্যে ছিলেন। রাত ১২ টার পর তারা বাংলাদেশের নাগরিক হবেন। আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ছিটবাসীদের উন্নয়নে কাজ করবো। যারা ছিটবাসীদের মুক্তির জন্য দীঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। জাতীয় পার্টি ও প্রধান মন্ত্রীর পক্ষ থেকেও তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।
ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সভাপতি মঈনুল হক জানান, আমরা ছিটমহলবাসীরা অন্ধকার জীবন নিয়ে দীর্ঘ সময় পার করেছি। দু’দেশের প্রধান মন্ত্রী আমাদের দিকে সদয় হয়ে ছিটমহল বিনিময় করেছেন। এজন্য আমি ছিটবাসীদের পক্ষথেকে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধনবাদ জানাই। তারা যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ছিটমহল ও ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ৫১টি ছিটমহল যা দুদেশের মুল ভুখন্ডের সাথে যুক্ত হবে এই ছিটবাসীদের প্রতি সদয় দৃষ্টি রাখেন। যাতে করে আমরা ছিটবাসীরা দীর্ঘ দিনের লাঞ্চনা ভুলে যেতে পারি।
রাত ১২টা ১ মিনিটে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ১১১টি ছিটের বাসিন্দারা এই মাহেন্দ্রক্ষনকে স্মরনীয় করে রাখতে অন্ধকারে ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর পথে যাত্রা করবে তারা। এছাড়াও ফানুষ উড়িয়ে, আতশ বাজি করে রাতভর চলবে আনন্দ উল্লাস। তাদের এই বাধ ভাঙ্গা উল্লাসের সাথে একত্রিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেছে দেশের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। বাংলাদেশের মুল ভূখন্ডের সাথে যুক্ত হওয়ায় এসব ছিটের ৪১ হাজার ৪শ ৪৯ জন মানুষ এখন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে গন্য হবে। আজ রাত ১২টা ১মিনিটে ছিটমহল নামের শব্দটি বিলুপ্ত হয়ে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হবে।
দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের বাসিন্দা মোজাফর জানান, আজ আমাদের ছিটবাসীদের খুশির দিন। আমরা ঘড়ির কাটার দিকে তাকিয়ে আছি কখন রাত ১২ টা বাজবে। আমরা বাংলাদেশী হয়ে যাবো। আমরা গর্বের সাথে বলতে পারবো আমরা বাংলাদেশী।
ছিটবাসীদের উৎসবে যোগ দেয়া একই ছিটের বাসিন্দা ও দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের সভাপতি আলতাফ হোসেন জানান, আমরা আজ রাত থেকে স্বাধীন দেশের নাগরিক। আর কেউ বলতে পারবে না আমরা ছিটের মানুষ।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এ