জাতীয়
ফেলানী হত্যার রায় আবারও বিবেচনা করবে ভারত
ফেলানী হত্যার রায় আবারও বিবেচনা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিএসএফের মহাপরিচালক ডি কে পাঠক। তিনি বলেন, ভারত ফেলানী হত্যার রায় আবারও বিবেচনা করবে। নতুন বিচারকের সমন্বয়ে আদালত গঠন করবে বিএসএফ। নয়াদিল্লিতে বিজিবির মহাপরিচালক আজিজ আহমেদকে এ আশ্বাস দেন বিএসএফ মহাপরিচালক।
বৃহস্পতিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক ডি কে পাঠক এ আশ্বাস দেন।
বিজিবির মহাপরিচালক জানান, যদি ফেলানীর পরিবার নিম্ন আদালতে ঘোষিত রায়ে সংক্ষুব্ধ হয় এবং বিএসএফকে তা অবহিত করে, তাহলে বিএসএফ নতুন বিচারকদের সমন্বয়ে নতুনভাবে আদালত গঠন করে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এ বিষয়ে ফেলানীর বাবা এবং তাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে বিজিবির পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এর আগে দুই দফায় ফেলানী হত্যার বিচার হয়। দুবারই মামলার প্রধান অভিযুক্ত সিপাহি অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গত সোমবার এ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদের নেতৃত্বে ২২ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
পাঁচ দিনব্যাপী এ সম্মেলনে সীমান্ত এলাকায় নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি, হত্যা, আহত করা, নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেফতার বা আটক করা, সীমান্ত লঙ্ঘন বা অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ও মানব পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান, ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদক, নেশাজাতীয় দ্রব্য পাচার ও সীমান্ত এলাকায় পপি চাষ, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও নির্মাণকাজ, উভয় দেশের সীমান্ত নদীসমূহের তীর সংরক্ষণ, পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির উপায় এবং বিবিধ বিষয়সমূহ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে বিজিবির সরাইল, যশোর, রংপুর ও চট্টগ্রাম রিজিয়নের কমান্ডার, বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেন। অপরদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক ডি কে পাঠকের নেতৃত্বে ২৪ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়।
ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ফ্রন্টিয়ার আইজিগণ, ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন এবং সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেন।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে পঞ্চদশী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের সিপাহি অমিয় ঘোষ।
ফেলানীর বাবা নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানার ভিটা গ্রামের নুরুল ইসলাম ১০ বছর ধরে দিল্লিতে কাজ করতেন। তার সঙ্গে সেখানেই থাকত ফেলানী।
দেশে বিয়ে ঠিক হওয়ায় বাবার সঙ্গে ফেরার পথে সীমান্ত পার হওয়ার সময় কাঁটাতারের বেড়ায় কাপড় আটকে যায় ফেলানীর। এতে ভয়ে সে চিৎকার দিলে বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করে।
কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এ