Connect with us

জাতীয়

খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছালো

Published

on

Khaledaস্টাফ রিপোর্টার:
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পৃথক ২টি দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ ফের পিছিয়ে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছে আদালত। তবে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষ্যগ্রহণ মূলতবির সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করা নিয়ে তাঁর ও দুদকের আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহতির ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। গতকাল মামলাটির বিচারে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায়ের আদালতে এই ঘটনা ঘটে। মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য গতকাল সাড়ে ১১টায় এজলাসে ওঠেন জজ বাসুদেব রায়। দুদকের পক্ষে মামলা দু’টির বাদি দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদের সাক্ষ্য প্রদানের হাজিরা দাখিল করা হয়। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, জয়নাল আবেদীন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ তালুকদার, খোরশেম আলম সাক্ষ্যগ্রহণ মূলতবি চেয়ে সময়ের আবেদনের ওপর শুনানি করেন। আবেদনে তারা নিরাপত্তাজনিত কারণে খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত হতে পারেন নাই এবং বিচারক নিয়োগের বৈধতা সংক্রান্তে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ-টু আপিল আবেদন দাখিলের জন্য সাক্ষ্যগ্রহণ মূলতবি চান। এ সময় দুদকের আইনজীবীরা সময়ের আবেদনের বিরোধীতা করেন। তারা বলেন, আপিল বিভাগের রায় হয়ে গেছে। কোন স্থগিতাদেশ নেই। অতএব আসামী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেও সাক্ষ্যগ্রহণ করা যাতে পারে। তাই সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর কোন সুযোগ নেই। শুনানি শেষে সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্য গ্রহণের নির্দেশ দিলে শুরু হয় অপ্রীতিকর ঘটনা। খালেদার আইনজীবীরা বিচারক এজলাসে থাকা অবস্থায় আদালত কক্ষের মধ্যেই চিৎকার চেচামেচি শুরু করেন। এ নিয়ে দুদকের আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। যা এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কিতে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে মৃদু হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এ সময় বিচারক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে দেখে বিব্রত হয়ে এজলাস থেকে নেমে খাস কামরায় চলে যান। ওই অচল অবস্থায় ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের এডিসি (প্রসিকিউশন) আনিসুর রহমান হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করেন। এরপর দুদকের পক্ষে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বিচারকের খাসকামরায় দেখা করতে যান সেখানে বিচারকের সঙ্গে কথা বলার পর বেলা পৌনে ২টার দিকে বিচারক ফের এজলাসে ওঠেন এবং আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মূলতবি রাখার আবেদন দেন।
উল্লেখ, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়ার চ্যারিটেবল ট্রাস্টের ওই মামলায় একই বিচারক গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে ২১ এপ্রিল প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন। আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার আবেদন বিচারাধীন থাকার কারণে ৯ বার সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে দেওয়া হয়। সর্বশেষ গত ১০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ঠিক করা হয়। উল্লেখ্য, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি করে দুদক কর্তৃপক্ষ। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামী করা হয়। আসামী তারেক রহমান সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশের বাইরে আছেন। মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু হতেই পলাতক। অন্যদিকে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট দুদকের দায়ের করা এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এ মামলায় ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। মামলাটিতে বিএনপি নেতা সচিব হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানও রয়েছেন আসামীর তালিকায়।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *