শিক্ষাঙ্গন
চাঁদাবাজির সিন্ডিকেটে অস্থিতিশীল বেরোবি, চাঁদাবাজি নাকি বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি?
সূত্রে জানা যায়, বেপোয়ারা এই চক্রটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন রংপুরের স্থানীয ২-৩ জন প্রভাবশালী কর্মকর্তা । যাদের সহযোগীতা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন স্থানীয় কর্মচারী। গত ১৩ আগস্ট থেকে শোকের মাস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠে এই চক্রের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, প্রাননাশের ভয়ে আমরা বাধ্য হয়ে তাদেরকে চাঁদা দিচ্ছি। চলতি মাসে চাঁদা না দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট তিনজন কর্মকর্তার লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করার অভিযোকে তাকে চাকুরী থেকে অপসারণের জন্য ২৪ ঘন্টার সময় বেধে দিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলো একটি চক্র। এর প্রতিবাদে প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম একটি লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানায় যে, ওই চক্রটি আমার কাছে দশ কোটি টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা বোম মেরে আমার অফিস উড়িয়ে দেয়ার হুমকী দেয়। পরে অবশ্য উপাচার্যের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।
ঠিক একই স্টাইলে গত ১৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগে ঢুকে চাঁদা না পেয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলীসহ এক কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করে আর একটি চক্র। এঘটনায় জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী চাঁদাবাজদের শাস্তির দাবী করে চার জনের নাম উল্লেখ করে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে মোহাম্মদ আলী বলেন, ১৬ আগস্ট দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান, শাহিন সর্দার এবং কর্মচারী শাহিন বেগ ও রুবেল আমার রুমে এসে ৫০০০ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি তাদেরকে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে গালিগালজ করে আমাকে মারতে শুরু করে এবং আমার অফিস ভাংচুর করে। ঘটনার সময় রেজিস্টার মোরশেদ উল আলম রনি ও সহকারী প্রক্টর শাহীনুর রহমান উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতিতেও তারা আমাকে মারধর করে।
মোহাম্মদ আলীর করা অভিযোগের কিছুক্ষণ পরেই উপাচার্য বরাবর আরেকটি পাল্টা অভিযোগ করে চক্রটি। সেই অভিযোগে বলা হয় ১৬ আগস্ট এ শোক দিবস সমন্ধে কথা বলতে চাইলে জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করেন। তারা সেই অভিযোগে মোহাম্মদ আলীর শাস্তি দাবী করেন।
তবে বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী জানান, তারা আমার সাথে শোক দিবস বা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনো কথাই বলেনি। তারা সরাসরি চাঁদা দাবী করে। সুতরাং বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করার বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তারা নিজেদের বাঁচাতে ও আমাকে ফাঁসানোর জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ করছে।
উল্লেখ্য, এই চক্রটিই বিরুদ্ধে গত ৩/৮/২০১৫ তারিখে সহকারী প্রক্টর শাহিনুর রহমানকে লাঞ্চিত করা এবং উপাচার্যের বাসভবনে দাঁড়িয়ে উপাচার্য ও তাঁর পরিবারকে গালাগাল করা, গত ৮/১২/১৫ তারিখে লাইব্রেরিতে হামলা চালিয়ে ২জন কর্মকর্তা এরশাদুজ্জমান ও মোঃ ইকবালকে লাঞ্চিত করা, গত ১ ও ২ জুলাই ১৫ ইং তারিখে রেজিস্টার দপ্তরে সেকশন অফিসার কাজী আসাদুজ্জামানকে প্রহার করা এবং গত ৪/২/২০১৫ তারিখে শিক্ষার্থীদের অনশন মঞ্চে হামলা এবং শিক্ষকদের মারধরের ঘটনাসহ আর ও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় বারবার তদন্ত কমিটি হলেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার (চলতি দায়িত্ব) মোরশেদ উল আলম রনি জানান, উপাচার্য ক্যাম্পাসের বাইরে আছেন। তিনি অতি দ্রুত ফিরে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর