Connect with us

আন্তর্জাতিক

দুই হাজার অতিথির রান্না করবে রোবট-রাঁধুনি!

Published

on

imageআন্তর্জাতিক ডেস্ক:  হেঁশেল আপনার— মালমশলার খরচপাতিও! এবং অতিথিরা তো বটেই! হোক না! সারা দিন অফিসে বা বাড়িতে খেটেখুটে সারা হওয়ার পর যদি তাঁদের জন্য খুন্তি নাড়তে হয়, তবে জীবনে সুখ বলে আর কী-ই বা পড়ে থাকে? ঝক্কিটা বাঁচানোর জন্য রেস্তোরাঁর হাতে গরম খাবার কিনে নেওয়া যায় ঠিকই! কিন্তু, তখন অতিথিরা তো বটেই, আপনার স্বামীও কি আর সুগৃহিণী বলে খাতির করবেন?

এ সব ভেবে গজগজ করবেন না। স্বামী বিবেকানন্দ বলতেন, গোমড়া মুখে রান্না না কি মোটে ভাল হয় না! আপনি বরং আর একটা বছর কোনওমতে টেনেটুনে পার করে দিন। তার পরেই তো আসছে আপনার রোবট-রাঁধুনি! মুখের কথাটি খসা মাত্র হেসে-খেলে ২০০০ জনের রান্না একা হাতে সেরে ফেলবে সে। ওই আপনারই হেঁশেলে, আপনারই খরচপাতিতে। তফাতের মধ্যে সুগৃহিণী হিসেবে নামডাকটা বজায় থাকবে কেবল আপনার!

ভাবছেন তো, এটাও গ্যাজেট নিয়ে নতুন একটা বুজরুকি? দিনের পর দিন রান্না করতে করতে মানুষের উপর আস্থা হারানোটা স্বাভাবিক! রান্নায় সামান্য এ-দিক ও-দিক হলে যখন মনের মানুষটিও কথা শোনাতে ছাড়ে না, তখন হেঁশেল-বন্দি মনে সব কিছুতেই অবিশ্বাস আসে বইকী! কিন্তু, ভাল করে শুনুন, আপনার মনের অবস্থাটা বুঝতে পেরেছে ‘মলি রোবোটিকস্’। পাশাপাশি, তারা বাড়াতে চাইছে ব্যবসার দিকটাও। সে জন্যই তারা বাজারে নিয়ে এসেছে ‘রোবোশেফ’। এমনকী, এর মধ্যে জার্মানির হ্যানোভার মেস টেকনোলজি মেলায় রেঁধেবেড়ে মানুষের মনও জয় করে ফেলেছে ‘রোবোশেফ’।  এ বারেই ওঠে সেই অমোঘ প্রশ্ন— ‘রোবোশেফ’ ঠিক কী কী করতে পারে?

রান্নার হাতটা যাতে নিখুঁত থাকে, সে কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে এ হেন রাঁধুনির দু’টি মসৃণ যান্ত্রিক হাত। বানিয়েছে ‘শ্যাডো রোবট কম্পানি’। আপনি যদি এর নাম শুনে থাকেন তো ভালই! না শুনলে বলি, খোদ নাসাও মাঝে মাঝেই তাদের যন্ত্রপাতির জন্য দ্বারস্থ হয় ‘শ্যাডো রোবট কম্পানি’-র। এ বার অনেকটা নিশ্চিন্ত লাগছে তো? ওই হাতের সঙ্গেই আপনার রান্নাঘরে ‘মলি রোবোটিকস্’ আলাদা করে বানিয়ে দেবে একটা রান্নার জায়গা। রান্নার জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম তারা বসিয়ে দেবে রান্নাঘরে। বসিয়ে দেবে একটা নতুন সিংক, আর একটা ওভেনও। ভাবছেন তো, ওগুলো দিয়ে কী হবে? ওগুলো তো আপনার আছেই! নতুন রাঁধুনিকে একটু জায়গা ছেড়ে দিয়েই দেখুন না! তার হাতদু’টি যেহেতু বড়সড়, তাই জায়গাটার মাপও তো হতে হবে সেই মতো!

এ তো গেল রাঁধুনিকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা! তার পর? আর কী, রান্না শুরু করা যাক! তবে শুরুতেই জানিয়ে রাখা ভাল, রোবট হলেও এই রাঁধুনি মোটেই যান্ত্রিক ভাবে রান্না করে না। থ্রিডি রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে তার মগজে পুরে দেওয়া হয়েছে মানুষের রান্না করার সব পদ্ধতি। সেগুলোই ধাপে ধাপে মেনে চলে ‘রোবোশেফ’ রান্না করে যাবে। যদি ভাবেন, কার না কার রান্নার পদ্ধতি ভরে দেওয়া হয়েছে রাঁধুনির মগজে, সে আবার যথেষ্ট ঠিকঠাক হবে কি না— তবে বলি, সে দুশ্চিন্তাও বাদ দিন। দুনিয়া কাঁপানো ডাকসাইটে শেফ টিম অ্যান্ডারসন নিজে হাতে রান্না করেছেন স্টুডিওয়, সেটাই রয়েছে এই রোবট-রাঁধুনির চিপ মেমোরিতে। স্টুডিওয় শেফ অ্যান্ডারসন অবশ্য বানিয়েছিলেন ‘ক্র্যাব বিস্ক’, তবে তাতে কিছু যায়-আসে না বলেই জানাচ্ছে ‘মলি রোবোটিকস্’। মোদ্দা কথা তো ধাপগুলো, সেটা বিখ্যাত শেফের তালিমে জেনেই নিয়েছে ‘রোবোশেফ’।

‘মলি রোবোটিকস্’-এর এয়েবসাইট বলছে, ২০১৭ সালেই তারা ক্রেতাদের জন্য বাজারে হাজির করবে ‘রোবোশেফ’-দের। তাদের মধ্যে ভরা থাকবে ১০০০টা রেসিপি। যেটা ইচ্ছে, ‘রোবোশেফ’ বানিয়ে দেবে সেটাই। শুধু রান্নাই নয়, তার পরের ধাপে বাসন মাজার ঝামেলাটাও নিজের হাতে তুলে নেবে এই রাঁধুনিরাই। আর কী! এ বার শুধু আপনি টাকা জমাতে থাকুন। আপাতত একটি রোবট-রাঁধুনিকে বাড়িতে নিয়ে আসতে হলে খরচ হবে ১৭০০০ ডলার। অনেকটা খরচ, না? চিন্তা নেই, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য গ্যাজেটের মতো এরও দাম হয়তো কমবে!

এখনও কি আপনার খুঁতখুঁতুনি যাচ্ছে না? ভাবছেন, খুড়শাশুড়ির শুক্তুনি বা শ্বশুরমশাইয়ের পছন্দের পাতুরি তো আর এই রোবট-রাঁধুনি বানাতে পারবে না! অথবা, মনের মানুষটিই যদি এমন কোনও কিছু খেতে চায়, যা ‘রোবোশেফ’-এর মেমোরিতেই নেই, তখন কী হবে?

চাপ নেবেন না। ‘মলি রোবোটিকস্’ বলছে, তারা পরের ভার্সনে ‘রোবোশেফ’-দের হাজির করবে ক্যামেরা লাগিয়ে। ওই ক্যামেরার সাহায্যে আপনি ‘রোবোশেফ’-এর মগজে পুরে দিতে পারবেন পছন্দের রেসিপি। এ বার তা হলে একটা পার্টির আয়োজন হোক?

বাংলাদেশেরপত্র.কম/এডি/আর

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *