খেলাধুলা
নাসিরের নৈপুণ্যে বাংলাদেশের জয়
দলকে সমতায় ফেরাতে ব্যাট হাতে দৃষ্টিনন্দন অপরাজিত শতক আর বল হাতে ৫ উইকেট দখল করেন টাইগারদের তারকা অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। শুধু নাসির নন, দলের দারুণ জয়ে ভূমিকা রাখেন ৪ উইকেট নেওয়া রুবেল হোসেন এবং উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো লিটন দাশ।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শতক হাঁকান বাংলাদেশ ‘এ’ দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান নাসির হোসেন। তার দারুণ শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৫২ রান। জবাবে ১৮৭ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত ‘এ’ দল। ফলে, ৬৫ রানের দাপুটে জয় তুলে নেয় সফরকারী বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি সমতায় ফেরার লক্ষ্য নিয়ে নামা মুমিনুল হকের দলটির। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ না হতেই ফিরে যান ওপেনার রনি তালুকদার। এরপর ৬০ রানের জুটি গড়েন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার এবং তিন নম্বরে নামা এনামুল হক বিজয়। সৌম্য ৩০ বলে ৫টি চারে ২৪ রান করে বিদায় নেন। আর বিজয়ের ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান। ৫৩ বলে ৩টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান বিজয়।
চার নম্বরে নামা মুমিনুল ব্যক্তিগত ৩ রান করে ফেরেন। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন দাস খেলেন ৪৫ রানের দারুণ এক ইনিংস। তার ছোট তবে গুরুত্বপূর্ণ ৫৭ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চারের মার।
সাব্বির রহমান ব্যক্তিগত এক রান করে বিদায় নেন। সাত নম্বরে ব্যাট হাতে নামা নাসির হোসেন ৯৬ বলে ১২টি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা হাঁকিয়ে ১০২ রান করে অপরাজিত থাকেন। আরাফাত সানি করেন ১৭ রান।
ভারতের হয়ে ১০ ওভারে ৪৪ রান খরচায় সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট তুলে নেন রিশি ধাওয়ান। দুটি উইকেট পান কর্ন শর্মা। ২৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিকদের দলীয় ৩১ রানের মাথায় ওপেনার আগরওয়াল ফিরে যান। রুবেল হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে লিটনের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে ভারতীয় ওপেনার করেন ২৪ রান।
আরেক ওপেনার উন্মুখ চাঁদ ৭৫ বলে ৫৬ রান করে নাসিরের বলে বিদায় নেন। মানিষ পান্ডে ৭০ বলে ৩৬ রান করে রুবেলের দ্বিতীয় শিকারে সাজঘরে ফেরেন। ৩৪তম ওভারে আক্রমণে আসা নাসিরের ঘূর্ণিতে ফেরেন সুরেশ রায়না এবং করুন নায়ার। নাসিরের দ্বিতীয় শিকারে সুরেশ রায়না ১৭ রান করে বিদায় নেন। ব্যক্তিগত ৪ রান করা করুন নায়ারকেও ফিরিয়ে দেন নাসির।
পরের ওভারে আবারো আক্রমণে আসেন রুবেল হোসেন। পান্ডের পর সঞ্জু স্যামসনকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান রুবেল। বিদায় নেওয়ার আগে মাত্র একটি বলই মোকাবেলা করতে পারেন স্যামসন। রুবেলের ওভারটি শেষ হওয়া মাত্র আবারো নাসিরের আঘাত। দলীয় ৩৬তম ওভারে নাসিরের চতুর্থ শিকারে ফেরেন রিশি ধাওয়ান।
এখানেই থামেনি ‘নাসির-রুবেল শো’। ৩৭তম ওভারের শেষ বলে কর্ন শর্মাকে ফিরিয়ে দেন রুবেল। টাইগার পেসার তার চতুর্থ উইকেটটি পেতে কর্ন শর্মাকে বোল্ড করেন। দলীয় ৪২তম ওভারের শেষ বলে আবারো আক্রমণ হানেন নাসির। নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেন তিনি। কালারিয়াকে ফিরিয়ে দেন নাসির। শেষ উইকেটটি তুলে নিতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। শেষ উইকেট হিসেবে ৩৪ রান করা গুরক্রিত মানকে ফিরিয়ে দেন আল আমিন হোসেন।
৪২.২ ওভারে ১৮৭ রানে গুটিয়ে যায় ভারত ‘এ’ দল। ৬৫ রানের জয়ের ফলে সিরিজে ১-১ এ সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে ১০ ওভারে ৩৬ রান খরচায় ৫টি উইকেট তুলে নেন নাসির হোসেন। ৪টি উইকেট তুলে নেন ৯ ওভারে ৩৩ রান খরচ করা রুবেল হোসেন। চার উইকেটের তিনটিই বোল্ড করেন রুবেল। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে লিটস দাশ দুটি ক্যাচ নেওয়ার পাশাপাশি তিনটি স্ট্যাম্পিং করেন।
বাংলাদেশ ‘এ’ দল: মুমিনুল হক (অধিনায়ক), এনামুল হক, রনি তালুকদার, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, আরাফাত সানী, রুবেল হোসেন, আল-আমিন হোসেন ও শফিউল ইসলাম।
ভারত ‘এ’ দল: উন্মুখ চাঁদ (অধিনায়ক), মানাক আগারওয়াল, মনিষ পান্ডে, সুরেশ রায়না, করুন নায়ার, সঞ্জু স্যামসন, গুরকিরাত সিং, রিশি ধাওয়ান, কর্ন শর্মা, রুশ কালারিয়া ও শ্রীনাথ অরবিন্দ।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এস