Connect with us

আন্তর্জাতিক

ব্রিটেনের বাংলাদেশি মেয়েরা আইএসে যোগ দিচ্ছে

Published

on

is bd

বাম থেকে খাদিজা, আমিরা ও শামীমা। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এরা সিরিয়ায় আইএসে যোগ দিয়েছে। ছবি : বিবিসি

অনলাইন ডেস্ক:
সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিচ্ছে ব্রিটেনের নারীরা। সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত ব্রিটেন থেকে ৫৬ জন নারী আইএসে যোগ দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সংখ্যাটা ৫০ থেকে ৬০ জন।

সম্প্রতি বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব নারীর মধ্যে বাংলাদেশি মেয়েরাও আছেন। অনলাইনের মাধ্যমে যোগ দেওয়া এসব নারী তুরস্কের সীমান্ত পার হয়ে যাচ্ছেন আইএসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব নারী আইএস সদস্যদের যৌনদাসী হিসেবে থাকেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ব লন্ডনে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার একটি স্কুল বেথনাল গ্রিন একাডেমির তিন শিক্ষার্থী শামীমা বেগম, আমিরা আবাসী এবং খাদিজা সুলতানা আর বাসায় ফেরেনি। ওদের বয়স ১৫ থেকে ১৭। প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া চলে যায়।

আমিরার বাবা বলেন, ‘সবকিছুই খুব স্বাভাবিক ছিল। তার চলাফেরা থেকে কিছুই বোঝা যায়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ও শুধু বলল বাবা, আমার একটু তাড়া আছে। ও শুধু একটা টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছিল- বাবা আমি একটু দূরে আছি। জোহরের নামাজ পড়েই চলে আসব। তোমরা চিন্তা করো না। কিন্তু ও আর ফেরেনি।’

আইএসে যোগ দিতে কেবল ব্রিটেন থেকেই গেছে পাঁচশোর মতো তরুণ, যার ১০ শতাংশেরও বেশি নারী।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কিশোরী, তরুণীদের পাশাপাশি মায়েরা যাচ্ছেন। অনুসন্ধানে প্রশ্ন করা হয়, ‘এসব নারীর পরিণতি : জিহাদি যোদ্ধাদের যৌনদাসী। তারপরও কেন যাচ্ছে তারা?’

কুইলিয়াম ফাউন্ডেশনের নিকিতা মালিক জানান, এর মধ্য দিয়ে মেয়েরা বিশ্বাস করতে শুরু করে যে তারাও কোনো একটা কাজে অংশ নিতে পারছে। পুরুষ যোদ্ধাদের মতো তারাও মনে করে পশ্চিমা দেশগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং ইসলামিক স্টেটের হয়ে যুদ্ধ করতে পারলে তারা ভালো মুসলিম হতে পারবে। একটি রাষ্ট্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তারা রাখতে পারছে সমান ভূমিকা।’

নিকিতা মালিক বলেন, ‘এ ছাড়া আরো কিছু বিষয় আছে যেগুলো তাদের ইসলামিক স্টেটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যেমন তারা হয়তো মনে করছে সমাজে বা কমিউনিটিতে তারা নিজেদের ঠিকমতো মানাতে পারছে না।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকরা জানিয়েছেন, আইএসে বেশকিছু নারী যোদ্ধা আছে যাদের কাজ অনলাইনের মাধ্যমে নতুন নতুন মেয়ে সংগ্রহ করা। টুইটারের মতো সামাজিক নেটওয়ার্কে এই অভিযান চালায় তারা। ধারণা করা হয়, গ্লাসগো থেকে যাওয়া একটি মেয়ের সঙ্গে অনলাইনে পরিচয়ের পরেই বেথনাল গ্রিনের একটি মেয়ে সিরিয়ায় চলে গেছে।

গবেষকরা বলছেন, সিরিয়াতে যাওয়া হচ্ছে এই মেয়েদের কারো কাছে অ্যাডভেঞ্চার আবার কারো কাছে রোমান্টিক এক অভিজ্ঞতা।

এসব মেয়েদের বলা হয় কীভাবে পুরোটা পথ পাড়ি দিতে হবে, মা-বাবাকে লুকিয়ে কীভাবে অর্থ পরিশোধ করতে হবে, বিমানের টিকেট কীভাবে এবং কোন ট্র্যাভেল এজেন্টের কাছ থেকে কাটতে হবে, যুক্তরাজ্যে কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে-এসব।

নিকিতা মালিক আরো বলেন, ‘তাদের বিয়ের কথাও আগাম বলে দেওয়া হয়। মেয়েরা ভালো করেই জানে তারা যখন সেখানে গিয়ে পৌঁছাবে তাদের বিয়ে করা হবে। আগে থেকেই তাদের ধারণা দেওয়া হয় সে কাকে বিয়ে করবে, তার ওই স্বামী কেমন, ওখানে গেলে সে কাজ করতে পারবে কি না, একজন শিক্ষক হতে পারব কি না, ওখানে তার ভূমিকা কি হবে- এসব বিষয়ে তাদের একটা প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়।’

লুটন শহর থেকে ১০ সদস্যের একটি পরিবারও বাংলাদেশে ছুটি কাটিয়ে ফেরার পথে ব্রিটেনে না এসে চলে গেছে সিরিয়ায়। বাংলাদেশি পরিবারগুলোতে এ নিয়েও অনেক দুশ্চিন্তা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *