Connect with us

শিক্ষাঙ্গন

চাকরি প্রত্যাশীদের আন্দোলনে অচল ইবি

Published

on

islamic_universit

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমানের স্বপদে প্রত্যাবর্তনের পরপরই চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে ক্যাম্পাস। চাকরির দাবিতে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় তারা। এসময় তারা প্রশাসন ভবনের সকল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে বলে জানা গেছে। এতে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া তারা ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহনকারী বাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে প্রফেসর পদে যোগ দান করেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আবেদনের কোন প্রত্যুত্তর না আসায় শনিবার পুণরায় তিনি স্বপদে যোগাদন করেন। যোগদানের পরপরই চাকরি প্রত্যাশীরা চাকরির দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করে দেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চাকরি প্রত্যাশী তৌফিকুর রহমান হিটলার, শফিকুর রহমান, মিজানুর রহমান টিটু, কাশেম মাহমুদ, মাহবুব হোসেন, আশিকুর রহমান জাপান, ইলিয়াস জোয়ার্দার, মাহমুদ হাসান লেলিন, মাসুদ রানা, আরব আলী, আনিসুজ্জামান লিটন, রাসেল জোয়ার্দার, বহিরাগত ক্যাডার বোমা পিকুল, মিন্টুসহ ৩০-৩৫ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা প্রশাসন ভবনে এস হট্টগোল সৃষ্টি করে। এ সময় তারা প্রশাসন ভবনের সকল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের দেয়। পরে প্রশাসন ভবনের মেইন গেটে তালা লাগিয়ে সেখানে অবস্থান নেয় তারা। এসময় ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার তার কার্যালয়ে এবং অনেক শিক্ষক-কর্মকর্তা প্রশাসন ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এতে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। অচল হয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাস। প্রশাসন ভবনের সামনে চাকরি প্রত্যাশীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অশ্লীল শ্লোগান দিতে থাকেন। এসময় প্রশাসনিক বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরকে চাকরি প্রত্যাশীদের হাতে লাঞ্চিত হতে দেখা দেখা। পরে বিশ্বদ্যিালয় প্রশাসনের আশ্বাসে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রশাসন ভবনের তালা খুলে দিলে ভিসিসহ অবরুদ্ধ সকলেই বের হয়ে চলে যান।

এ ঘটনার জের ধরে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহনকারী বেলা ২টার বাস আটকে দেয় ছাত্রলীগের চাকরি প্রত্যাশী ও বহিরাগতরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহরে অবস্থানকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলেই ট্রাক, টেম্পু, ভ্যান, নচিমন ও করিমন যোগে ঝুলতে ঝুলতে ঝুঁকির মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

কুষ্টিয়া শহরে থাকা গণিত বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘চাকরি প্রত্যাশীদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জিম্মি। প্রশাসনের ব্যর্থতায় বার বার এই চাকরি প্রত্যাশীরা ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।’

এদিকে চাকরি প্রত্যাশীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে একে অন্যকে বেকায়দায় ফেলতে তাদেরকে ব্যবহার করে আসছেন।

এ ব্যাপারে ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকারের বলেন, ‘চাকরির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জরি কমিশন থেকে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞ উঠিয়ে নিলে আমরা তাদের বিষয়টি বিবেচনা করব।’

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে এই চাকরি প্রত্যাশীরা বিভিন্ন সময়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন ভবনে তালা, লুটপাটসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে বসে গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *