দেশজুড়ে
পঞ্চগড়ে পাহাড়ি ঢল ও লাগাতার বর্ষণে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি
ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড়: পঞ্চগড় জেলায় গত এক মাস লাগাতার বর্ষণ ও রবিবার আকস্মিকভাবে করতোয়া, মহানন্দায় পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বেড়ে জেলার অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়ে নদী সংলগ্ন হাজার হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে । জেলার বৃহৎ করতোয়া নদীর পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। পাহাড়ি ঢলে নদীর পাড়ের মানুষ রয়েছে আতঙ্কে।
হাজার-হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে নিজের বাসস্থান ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ঘড়-বাড়ি, কৃষি আবাদ, স্কুল কলেজেসহ শত শত গ্রাম। অনেক গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।
ধারনা করা হচ্ছে, মহানন্দা নদীর উপর নির্মিত ভারতের ফুলবাড়ি ব্যারেজ হিমালয় থেকে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে এবং করতোয়া নদীর উপর নির্মিত ভারতের আমবাড়ি ব্যারেজ এর গেট খুলে দেয়ায় পঞ্চগড়ের হাজার হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পরেছে।
পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে নদীর পাড়ে বসবাসকারী মানুষেরা। নদীর পানি বাড়তে থাকায় আতঙ্কে রয়েছেন এসমস্ত গ্রামবাসী। পানিবন্দি মানুষদের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। এসব মানুষের থাকা খাওয়ায় মারাত্মক দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে জেলার অধিকাংশ গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে পানি বন্দি মানুষের কষ্ট। তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়ন করতোয়া নদীর পানি বেড়ে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে ভজনপুর বাজার, ভেলুপাডা, ডাঙ্গী, গোলাপদীগছ, গনাগছ, শিপাহি পাড়া, ভদ্রেশর, শান্তিনগর, কির্তন পাড়া গ্রাম, দেবনগড় ইউনিয়নের কলেজপাড়া, বালুবাড়ির, সিবচন্ড, কালিয়ামনি, ঝালেংঙ্গি, ধানসুকা, নিজ বাড়ি, পাথর ঘাটা, আঠোর খারী, শেক গছ, ময়না গুড়ী গ্রাম, তেঁতুলিয়ার সরদার পাড়া, রনচন্ডি, খয়খাট পাড়া, কাশেম গঞ্জ, বাংলাবান্ধা, পঞ্চগড় সদর উপজেলার একাধীক গ্রাম বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
জানা গেছে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদী সংলগ্ন বেংহারি বনগ্রাম, কাজল দিঘী কালীগঞ্জ, মাড়েয়া বামন হাট, শালডাঙ্গা, পামুলী, দেবীডোবা, সুন্দর দিঘী,চেংঠি হাজরাডাঙ্গা, সোনাহার, বড় শশী, টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নসহ দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন সহ করতোয়া নদী সংলগ্ন হাজার হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
স্থানিয়য় ভাবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বন্না দর্গতদের জন্য চিরা মুড়ি দেয়া হলেও পানি বন্দি এসব এলাকার মানুষের দাবী সরকারী ভাবে কোন সাহায্য বা খোজ খবর নেয়া হয়নি।
পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, নদীর নাব্যতা হাড়ীয়ে গভিরতা কমে গিয়ে নদীর দু পাশ প্লাবিত হচ্ছে। তবে অসাভাভিক হারে পানি বাড়ায় কত সে: মিটার পানি বিপদ সিমরি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সে বিষয়টি তিনি জানেন না।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক অমর কৃষ্ণ মন্ডল জানান, পানিবন্দি এ সমস্ত মানুষের পাশে থাকার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে। সেই সাথে ত্রানের জন্য সঠিক পরিসংখা জানাতে বলা হয়েছে। পানিবন্দিদের বাড়ি থেকে সরিয়ে স্কুল কলেজে আশ্রয় দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পানি বন্দিদের জন্য দ্রুত ত্রান সরবরাহ করা হবে।
সর্বশেষ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পঞ্চগড়ের করতোয়া, মহানন্দায়, ডাহুক, টাংঙ্গন, তালমা, চাওয়াই, ভেরসা, বেরং, সহ ২৬ টি নদীর পানি বাড়া অব্যাহত আছে।