জাতীয়
গুলশান হামলার অপারেশন কমান্ডার ছিল জঙ্গি মারজান
গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম জঙ্গি মারজানকে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জানান, মারজানের আইডিতে গুলশান হামলার ছবি পাঠানো হয়েছিল। গোপন টেক্সট বা অ্যাপসের মাধ্যমে এই ছবি পাঠায় হামলায় অংশ নেওয়া জঙ্গিরা। সে তা ওপেন করে। পুলিশ এক জঙ্গির মোবাইল ফোন থেকে তা উদ্ধার করে। এ ছাড়া মারজানের ছবিও পায়।
পুলিশ জানায়, মারজান বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে গুলশান হামলার ছবি পাওয়ার পর তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করে। নিউ জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মারজান সংগঠনের প্রচার বিভাগের দায়িত্বও পালন করে আসছে। হামলার পর পরই জিম্মিদের গুলিবিদ্ধ ছবি বিশেষ অ্যাপসে মারজানের কাছে পাঠানো হয় হলি আর্টিজানের ভেতর থেকে। তখন মারজান জঙ্গিদের নির্দেশ দেয় প্রত্যেককে গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করতে। এরপর জিম্মিদের গুলি করার পাশাপাশি গলা ও পেট কাটা শুরু করে জঙ্গিরা। সেই ছবি আবার তার কাছে পাঠায়। তা দেখে প্রশংসা করে মারজান।
মারজান বিভিন্ন সময় জঙ্গিদের মোটিভেশন করার কাজও করত। টার্গেট ব্যক্তিদের খুন করলে যে সহজে জান্নাতে যাওয়া যাবে এই ধারণা দিয়ে তাদের মগজ ধোলাইয়ের কাজও করত সে।
এদিকে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর ছাদে সন্দেহভাজন হাসনাত রেজা করিম ও তাহমিদ হাসিব খানের যে ছবি দৈনিক প্রথম আলো ও যুগান্তরে প্রকাশ হয়েছে তা পুলিশকে দিতে হবে বলে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। এই ছবিগুলো মামলার তদন্তের স্বার্থে পরীা করে দেখতে হবে বলে আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক হুমায়ুন কবিরের এক আবেদনের পরিপ্রেেিত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াসির আহসান এই নির্দেশনা দেন।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম গতকাল বলেন, ‘আমরা ছবি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছি। আদালত ছবি দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা এই ছবি পরীা করে দেখব। ছবি আসল কিনা তা জানা দরকার।’
সূত্র জানায়, হলি আর্টিজানে হামলার আগে নিউ জেএমবির মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী ৫ জঙ্গিকে নিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে গুলশানে যায়। তখন তামিমের সঙ্গে মারজানও ছিল। ৫ জনের গ্রুপটি সামনে ২ জন এবং পেছনে ৩ জন করে দুভাগে বিভক্ত হয়ে হেঁটে হলি আর্টিজানে প্রবেশ করে। এর কিছুক্ষণ আগে মারজান চলে আসে মিরপুরের জঙ্গি আস্তানায়।
এই মারজান উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলার অপারেশন কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে। রোজার শুরুতে তাকে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসে তামিম চৌধুরী। লক্ষ্য ছিল ঢাকায় বড় নাশকতা চালানো।