Connect with us

দেশজুড়ে

ফেনীতে হেযবুত তওহীদের জঙ্গিবাদ বিরোধী আলোচনা সভা

Published

on

8অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ।

ফেনী প্রতিনিধি: ফেনীতে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে ফেনী জেলা আমির দিল আফরোজের সভাপতিত্বে ফেনী আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন জেলা দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলী (জি.পি), জেলা আ. লীগের সহ-সভাপতি ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট প্রিয় রঞ্জন দত্ত এবং মুখ্য আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের আমির মসীহ উর রহমান।
অনুষ্ঠানের মূখ্য আলোচক তার বক্তব্যে বলেন, ”সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ কোন ধর্মই সর্মথন করে না। কতিপয় স্বার্থান্বেষী আলেম নামধারী ধর্মব্যবসায়ী মোল্লা শ্রেণি ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে এদেশের তরুণদের জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে হেযবুত তওহীদ ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা সর্বস্তরের মানুষের মাঝে তুলে ধরে আসছে এবং সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, ”বর্তমান যে ইসলাম চলছে এটা আল্লাহ ও তার রসুলের (সা.) দেওয়া ইসলাম নয়। আমরা যেভাবে চলছি এভাবে যদি চলতে থাকি তাহলে আফগানিস্তান, সিরিয়ার মত আমাদেরও একই অবস্থা হবে। তাই আমি বলতে চাই এই টার্গেট শুধু দেশের বিরুদ্ধে নয় এই টার্গেট আমাদের প্রিয় ধর্ম ইসলামেরও বিরুদ্ধে।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ”বর্তমানে কিছু যুবক ধর্মের বিকৃত ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে জঙ্গিবাদী কর্মকান্ড চালাচ্ছে। তাদেরকে ধর্মের প্রকৃত আদর্শ ও শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে এই পথ থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, ”১৬ থেকে ২৩ বছর বয়সের ছেলে মেয়েদের বলা হয় Danger period. এরা যাদের সাথে একত্র হয় তার মত হয়। আজকে এই বয়সের শতশত তরুণকে শেখানো হয় গুলি করার চেয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করলে বেশি সওয়াব। পেছন থেকে আঘাত করলে সওয়াব বেশি হয়, এক কোপে শিরোচ্ছেদ করলে তো কোন কথাই নাই। তাহলে কোথায় গেল ধর্ম আর কোথায় গেল মানবতা।”
তিনি বলেন, ”আমেরিকা জঙ্গী তৈরী করছে আবার জঙ্গীদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে। আফগান থেকে ইরাক বার বার তারা লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে। আফগানে তারা বৌদ্ধ মন্দির এবং আমাদের দেশে নিরিহ মানুষ, সেবায়েত হত্যা করেছে। এখানে বিদেশীরা ঘাঁটি গাড়তে চায়। আমরা কোথায় থেকে এসেছি কোথায় যাব। মানুষই সবার চেয়ে বড় সত্য। মানুষের সেবা করাই বড় ধর্ম।”
হেযবুত তওহীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ”আপনারা গ্রামে গঞ্জে হেযবুত তওহীদের প্রচার করেন, মানুষ উপকৃত হবে। আলেমরা এক সময় বলতেন ইংরেজি পড়া হারাম, এখন কি তারা সেই হারাম পরিবর্তন করেন নাই? আপনারা স্কুল কলেজে গিয়ে এই সত্য জানান, তাহলে সত্য মানুষ জানবে।”
তিনি আরও বলেন, ”ঈমান ধ্বংস হয় না। ঈমানকে শক্তিশালী করেন, মানুষকে বাঁচান। আমাদের হিন্দু বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে যদি বলেন আমরাও আপনাদের সাথে যাব। আপনাদের সহোযোগিতা করবো।”
এসময় তিনি প্রশাসনের পাশাপাশি মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত হেযবুত তওহীদ আন্দোলন জঙ্গিবাদ বিরোধী এই মহতী উদ্যোগ গ্রহন করায় তিনি হেযবুত তওহীদকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া তিনি দেশের স্বার্থে, জাতির স্বার্থে জঙ্গিবাদবিরোধী গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সকলকে আহ্বান জানান।
হেযবুত তওহীদ সদস্য রবিউল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী সদর উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নূর হোসেন, হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় আমির শফিকুল আলম উখবাহ ও হেযবুত তওহীদের সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শফিকুল আলম উখবাহ বলেন, ”আমাদের দেশকে নিয়ে এবং ধর্মকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।তাই যারা প্রকৃত মো’মেন, যারা আল্লাহ্ রসুলকে ভালোবাসেন তাদের ঈমানী কর্তব্য এবং যারা দেশকে ভালোবাসেন তাদের নাগরিক কর্তব্য চলমান এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, যাবতীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ধর্ম বর্ণ দল মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাই আমি আহ্বান করছি আসুন আমরা সকলে একস থে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকল ধরনের অন্যায়ের কাজ করি।”
হেযবুত তওহীদের সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান বলেন, ”জনগণকে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা দিতে হবে। যা জানতে পারলে পথভ্রষ্টরা তাদের ভুলটা বুঝতে পারবে এবং জনগণও সচেতন হবে। মানুষ যখন নিজেরাই ধর্ম-অধর্মের পার্থক্য বুঝতে সক্ষম হবে তখন কেউ আর তাদেরকে ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থ, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না।তাদেরকে দিয়ে মানুষের ক্ষতি হয়, দেশের ক্ষতি হয়, ইসলামের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজে লিপ্ত করতে পারবে না।
বর্তমানে পৃথিবীময় শুধু শক্তি প্রয়োগ করে এ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমাদের প্রস্তাবনা হচ্ছে শুধু শক্তি দিয়ে জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে না, শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি একটি সঠিক আদর্শও লাগবে যে আদর্শ জঙ্গিবাদের ত্রুটিগুলো সুস্পষ্ট করবে। সেই সঠিক ও নির্ভুল আদর্শটা তুলে ধরেছে হেযবুত তওহীদ।”
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক আমির মো. সাইফুল এসলাম, সদস্য মো. একরামুল হক ভুঁইয়া, জামাল উদ্দীন রুবেল, আব্দুল ওয়াহেদ মামুন, মো. আজমল হোসাইন, আহাদ আলী, মো. গোলাম কবীর, আইমান আম্মদ কামাল, রিয়াদ হোসেন, নিজাম উদ্দিন, আশিক মিয়াসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী, সচেতন মহল, গণমাধ্যমকর্মী, প্রশাসনের সদস্য ও শত শত সাধারন জনতা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *