Connect with us

খেলাধুলা

৩২ খেলোয়াড় পেলেন জাতীয় ক্রীড়া পদক

Published

on

crickrt playerডেস্ক রিপোর্ট: আজ রোববার ঢাকায় জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকাসক্তি থেকে যুব সমাজকে ফিরিয়ে আনতে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এই যে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস বা মাদকাসক্তি। এগুলো মানুষের মন, মানসিকতা ও স্বাস্থ্য নষ্ট করে দিচ্ছে; সমাজকে কলুষিত করে দিচ্ছে। “এখান থেকে আমাদের যুবসমাজকে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই খেলাধুলার আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “খেলাধুলা আমাদের দেশের জন‌্য একান্তভাবে প্রয়োজন। কারণ, খেলাধুলার মধ্য দিয়ে ছেলে-মেয়েদের একটা শৃঙ্খলাবোধ, অধ্যাবসায়, দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ এবং দেশপ্রেম জাগ্রত হয়।
“যত বেশি খেলাধুলার সাথে আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের সম্পৃক্ত রাখতে পারব, তারা ততো সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। তারা চিন্তা, মন, মননে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে। অনেক বেশি উন্নত হবে। কারণ, একটা সুস্থ দেহ থাকলে, সুস্থ মনও থাকবে। তখন আর এই মনটা এদিক-ওদিক যাবে না।”
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ২০১০, ২০১১ এবং ২০১২ সালের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। সব উপজেলায় ‘মিনি স্টেডিয়াম’ নির্মাণের কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম আমরা করে দেব। সেখানে বারো মাসই খেলাধুলা হতে পারবে। সম্পূর্ণ আলাদা মাঠ হবে। ছোট্ট একটু ব্যবস্থা থাকবে।”
“অত বেশি গ্যালারি, বসার জায়গা থাকবে না। এমনভাবে এটা তৈরি করা হবে, যেন মানুষ চলতে-ফিরতে খেলাধুলা দেখতে পারে। মানুষের কাছে দৃশ্যমান করতে হবে। কারণ, দেখার মধ্যে দিয়ে মানুষের মাঝে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ জমবে”, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
খেলাধুলায় প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক বিভাগে একটি করে বিকেএসপি হবে। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) এখন শুধু ঢাকার সাভারে আছে। অনুষ্ঠানে দেশের ঐতিহ্যবাহী বিলুপ্তপ্রায় খেলাগুলোর প্রতি নজর দেওয়ার তাগিদও দেন প্রধানমন্ত্রী। “গ্রামের কিছু খেলা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এই খেলাগুলো চালু করতে হবে। দেশীয় খেলাগুলো ফেলে দিলে চলবে না।”
প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে আবাসনসহ আন্তর্জাতিক ভেন্যু যাতে হতে পারে, সে ব্যবস্থা আমরা করে দেব।”
“ক্রিকেটের জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম করা প্রয়োজন। পূর্বাচলে আধুনিক স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনা আছে”, যোগ করেন তিনি। এসময় কক্সবাজারে একটি ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর বাংলাদেশকে অনেক সাফল্যই এনে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে নজর কেড়েছেন পুরো ক্রিকেটবিশ্বের। বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক সাফল্যে ব্যাপক অবদান রাখার স্বীকৃতিও পেলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে জাতীয় ক্রীড়া পদক গ্রহণ করেছেন সাকিব।
২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালের জন্য মোট ৩২ জন ক্রীড়াবিদকে মনোনীত করা হয়েছিল জাতীয় ক্রীড়া পদকের জন্য। সাকিব এই পুরস্কার জিতেছেন ২০১২ সালের জন্য। সাকিব ছাড়াও এবার এই পদক উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের হাতে। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য মরণোত্তর পদক দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামালকে।
দেশের বিশিষ্ট ক্রীড়াব্যক্তিত্বদের সম্মানিত করতে ১৯৭৬ সালে জাতীয় ক্রীড়া পদক চালু করা হয়। এ পর্যন্ত মোট ১৮৮ জন ক্রীড়াব্যক্তিত্ব এ পদক পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১৯ জন ক্রিকেটার। সাকিবের আগে আইসিসি ট্রফিজয়ী ক্যাপ্টেন আকরাম খান ১৯৯৮ সালে পদক পান। মোহাম্মদ রফিক জাতীয় পদক পেয়েছিলেন ২০০৬ সালে। আর ২০১১ ও ২০১২ সালের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন খালেদ মাসুদ ও সাকিব।
২০১০ সালের জাতীয় ক্রীড়া পদক বিজয়ীরা হলেন : হারুন-উর-রশীদ (সুইমিং), আতিকুর রহমান (শুটিং), মাহমুদা বেগম (অ্যাথলেট), দেওয়ান মো. নজরুল ইসলাম (জিমন্যাস্টিক), মিজানুর রহমান মানু (সংগঠক), এ এস এম আলী কবির (সংগঠক), মো. তকবির হোসেন (সুইমিং, মরণোত্তর), ফরিদ খান চৌধুরী (অ্যাথলেট), নেলি জেসমিন (অ্যাথলেট) ও নিপা বোস (অ্যাথলেটিকস, অটিস্টিক)।
২০১১ সালের পদক বিজয়ীরা হলেন : রওশন আরা ছবি (জিমন্যাস্টিক), মো. কাঞ্চন আলী (বক্সিং), মো. আশরাফ আলী (রেসলিং), হেলেনা খান ইভা (ভলিবল), খালেদ মাসুদ পাইলট (ক্রিকেট), রবিউল ইসলাম (বডিবল্ডিং), জুম্মন লুসাই (হকি), কুতুবুদ্দিন মোহাম্মদ আকসির (সংগঠক), আশিকুর রহমান মিকু (সংগঠক) এবং শহীদ শেখ কামাল (অ্যাথলেটিকস এবং সংগঠক, মরণোত্তর)।
২০১২ সালের পদক বিজয়ীরা হলেন : সাকিব আল হাসান (ক্রিকেট), মো. মহসিন (ফুটবল), খুরশীদ বাবুল (ফুটবল), আশীষ ভদ্র (ফুটবল), আবদুল গাফ্ফার (ফুটবল), সত্যজিৎ দাস রুপু (ফুটবল), ফিরোজা খাতুন (অ্যাথলেটিকস), নাজিয়া আকতার যূথি (ব্যাডমিন্টন), কাজী রাজিবউদ্দিন আহমেদ চপল (সংগঠক), মামুনুর রশিদ (হকি), সালমা রফিক (সংগঠক, মরণোত্তর) ও নুরুল আলম চৌধুরী (সংগঠক)।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *