কুড়িগ্রাম
ব্রহ্মপুত্র নদে বিলিন খেদাইমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বাশঁ ঝাড়ের নিচে
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, রৌমারীর উপজেলায় খেদাইমারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৩ সালে স্থাপিত হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার মানও অনেক ভালো। বর্তমানে বাগুয়ারচর নামক স্থানে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা সাড়ে ৩শ’জন, শিক্ষক সংখ্যা ৫জন। স্থানীয়দের সহযোগীতায় বাঁশ ও টিন দিয়ে একটি ছাপরা তৈরি করা হয়। ছাপরা ঘরেও ছাত্র-ছাত্রীদের জায়গা হচ্ছে না। বিদ্যালয়টিতে পরিমানে আসবাবপত্র নেই। এমনকি বিদ্যালয়টি একাধিকবার ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। ফলে বাশঁ ঝাড়ের নিচে পাঠদান শিক্ষার্থীদের অন্তহীন দুর্ভোগ।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র মিঠুন, লিটন, সাজেদুল, বিউটি,স্বপ্না, ৪র্থ শ্রেণীর ঝড়না, ফারজানা, ২য় শ্রেণীর রাশেদুল ও ১ম শ্রেণীর নিশি খাতুনের সাতে কথা বলে জানা গেছে, প্রচন্ড রোদে সীমাহীন কষ্ট সর্য্য করে খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বৃষ্টির দিনে শিক্ষার্থীদের বই খাতাসহ স্কুলের ব্রেঞ্চ ভিজে গিয়ে জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে ভুগতে হয়। এভাবে আর কতদিন আমরা খোলা আকাশের নিচে পড়ালেখা করব।
প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে শিক্ষা অধিদপ্তরের আর্থিক সহযোগিতায় প্রকৌশলী অধিদপ্তরের বান্তবায়ণে চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন এবং তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনসেট ভবন নির্মাণ করা হয়। এ বছরের ১৯শে এপ্রিল মাসে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ন নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। ওই উপজেলা প্রকৌশলী, নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়াম্যান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্থানীয় পরিদর্শন করে বিদ্যালয়টি বাগুয়ারচর নামক স্থানে স্থান্তরিত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু নতুন ভবন ও শ্রেণী কক্ষের সংকটে দুই শিফটে ছাপরা ঘরে পাঠদান করতে হচ্ছে। নতুন বছরের নতুন বই নিয়ে উৎসবের আমেজে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলেও শ্রেণীর কক্ষে পড়ানোর কোন পরিবেশ না থাকায় বাঁশ ঝাড়ের নিচে পাঠদান করাচ্ছি।
এব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, স্কুল ভবনটি সম্পূর্ন নদীতে ভেঙ্গে গেলে নতুন ভবন নির্মাণ করতে আপনার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু আশানুরুপ কোন সাড়া পাচ্ছিনা।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভবন না থাকায় ঠিকমত ক্লাশও চালাতে পারছেননা শিক্ষকরা। বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মো: মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী বলেন বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাধ্যমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অস্থীয় ভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানের জন্য ডেউটিনের ছাপড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার ১৭টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলিন হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন রোধ না করলে অদুর ভবিষৎতে স্বাধীনতার মুক্তঞ্চল রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা সর্ম্পূণ নদীর গর্ভে হারিয়ে যাবে।