আন্তর্জাতিক
রোহিঙ্গাদের নৌকা আটকে বিজিপি’র গুলি
৪২ জন রোহিঙ্গা বহনকারী ওই নৌকায় বিজিপি’র গুলিতে আহত একজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় নাফ নদীর পানিতে ভাসতে দেখে বাংলাদেশের জেলেরা উদ্ধার করে টেকনাফে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে আসে। বুধবার রাতে নৌকাযোগে দুই ছেলেকে নিয়ে পালানোর সময় সে গুলিবিদ্ধ হয়। তার দুই ছেলের কোন হদিশ মেলেনি। জানা গেছে, বিজিপি তাদের সীমান্তের কাছে নাফ নদী সংলগ্ন জাঙ্গালা খাল এলাকায় রোহিঙ্গা ভর্তি নৌকা আটকে যাত্রীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। রাত ৮টার দিকে গুলি করার পর বিজিপি তাদের স্পিডবোর্ডের সঙ্গে বেঁধে নৌকাটি নদীতে টেনে নিয়ে যায়। এ সময় নৌকা ছিদ্র হয়ে পানি উঠতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ওই নৌকার যাত্রীদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা কেউ জানে না। তবে এখনো দুই সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়েননি উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা ইমান হোসেন। বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের টহল টিম এপার থেকেই একযোগে অনেকের কান্নার আওয়াজ শুনেছে। কিন্তু কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে নির্যাতন করে একটি এলাকা থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের তাড়ানোর পর নতুন করে আরেক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দু’দিন আগে নতুন করে রাখাইন রাজ্যের বুচিডং থানার বিভিন্ন বাড়িঘরে হামলা শুরু করেছে তারা। এর আগে মংডু থানার অন্তত ১৫টি গ্রাম আক্রান্ত হয়। সেসব গ্রাম এখন বিরাণভূমি। নির্যাতন থেকে রক্ষা পায়নি গ্রামের নারী, পুরুষ, শিশু কেউই। নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। হামলায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় মগ যুবক, বিজিপি এবং পুলিশও অংশ নেয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সুচির দেশ মিয়ানমারে গত কয়েক সপ্তাহে সেনাবাহিনী ও পুলিশের নির্যাতনের মুখে পড়ে কত রোহিঙ্গা মারা গেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। নেই কতজন দেশ ছেড়েছে সেই হিসেবও। তবে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু সংস্থা বলছে, অন্তত ১০ হাজার সংখ্যালঘু মুসলমান শুধু বাংলাদেশেই পালিয়ে এসেছে।