আলফাডাঙ্গা প্রতিনির্ধি ঃ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা রূপালী ব্যাংকের (সাবেক) শাখা ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সিসি লোন দেখিয়ে নিজেই কোটি কোটি টাকা আতœসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রূপালী ব্যংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগে ব্যাংকের সিসি-১১১নং লোন গ্রহীতার মেয়ে সাবিনা সুলতানা জানান তার বাবার কাছ থেকে স্বাক্ষর কৃত বিলাঙ্ক চেক নিয়ে টাকা আত্মসাত করেছেন ২০১১ সালে কর্মরত উক্ত ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল ইসলাম। বর্তমানে তিনি ঢাকা রুপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ.জি.এম হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি রূপালী ব্যাংক আলফাডাঙ্গা শাখায় ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পযর্ন্ত শাখা ব্যবস্থাপক হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি কর্মরত থাকা কালীন সময় অর্থের লোভ দেখিয়ে নিজেস্ব আত্বীয় সজনদের গ্রাহক সাজিয়ে বিভিন্ন নামে ভুয়া পর্চা,কাগজপত্র, ব্যবসা বিহীন প্রতিষ্ঠান,বন্ধকী দলিলে ব্যাংকের প্যানেল উকিলের স্বা∂র জাল ও জমির মূল্য অধিক দেখিয়ে সিসি লোনের মাধ্যমে লুটে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখাযায় (সাবেক) ম্যানেজার মো. রেজাউল ইসলামের বাড়ি নিজ উপজেলা বুড়াইচ ইউনিয়নে ফলিয়া গ্রামে। সে সূত্রে সাবিনা সুলতানার পিতা মো. সরোয়ার বিশ্বাসের সঙ্গে সু-সম্পর্ক হয়। সুম্পর্কের জের ধরে সরোয়ারকে অর্থের লোভ দেখিয়ে বেড়ির হাট বাজারে মেসার্স বিশ্বাস এন্টার প্রাইজ নামে একটি ব্যবসা দেখিয়ে ভুয়া পর্চা,কাগজপত্র তৈরি করে, বন্ধকী দলিলে ব্যাংকের প্যানেল উকিলের স্বা∂র জাল এবং জমির মূল্য অধিক দেখিয়ে উক্ত শাখা হইতে সিসি(হাইপোঃ) লোন নং-১১১নম্বরে ২৮/৭/২০১১ ইং তারিখে ৬(ছয়) লক্ষ টাকা লোন প্রদান করেন। যা বর্তমানে সুদ-আসলে প্রায় ১২লক্ষ টাকা হয়েছে। লোন গ্রহীতা সরোয়ারের নিকট হইতে স্বাক্ষর কৃত বিলাঙ্ক চেক শাখা ব্যবস্থাপক (রেজাউল) রেখে দিয়ে বলেন, তুমি বাড়ি চলে যাও,লোনের টাকা পাশ হলে তোমাকে খবর দিব,তখন টাকা নিয়ে যেও। সরোয়ারের সরলতার সুযোগ নিয়ে শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল উক্ত চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন বলে অজ্ঞাত স্থানথেকে মুঠো ফোনে অভিযোাগ করেন সরোয়ার বিশ্বাস। তিনি আরও বলেন, রুপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পিএস মো. হাসান মিয়া রেজাউলের পাশের গ্রাম ও আত্মীয় হওয়ায় এই অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। তবে সরোয়ার বিশ্বাস টাকা উত্তোলন না করেও মামলা হওয়ায় পলাতক রয়েছেন।এ বিষয় লোন গ্রহীতা ঋন খেলাপী হলে তৎকালিন শাখা ব্যবস্থাপক মো. আমিরুল ইসলাম প্রধান জামিনদার শরিফ হারুন অর রশিদকে বাদ রেখে সরোয়ারের আপন দুই ভাই হতদরিদ্র সহজ সরল কৃষক মো. আবজাল বিশ্বাস(৬০) ও মো. মোসলেম বিশ্বাস(৭০) এবং সরোয়ার বিশ্বাসের স্ত্রী গৃহিনী তহমিনা বেগম(৪৫)কে জামীনদার হিসাবে শনাক্ত থাকার দায়ে আদালতে মামলা করেন। বর্তমানে তারা ছয় মাসের জন্য জেল হাজতে রয়েছেন।কিন্তু প্রকৃত অপরাধীরা ধরা ছোয়ার বাহিরে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আলফাডাঙ্গা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উক্ত ব্যাংকের প্রধান সিসি লোন গ্রহিতা আলহাজ্ব মো. মাঈনউদ্দিন আহম্মেদ। তিনি আরও বলেন, এ ছাড়াও মেসার্স সামস্ ট্রেডার্স প্রতিষ্ঠানের নামে মারজান মিয়াকে সিসি লোন-১১২ ও মেসার্স কনজ এন্টার প্রাইজ এর কনজের নামে সিসি লোন-১০৩ নম্বরে ভুয়া কাগজপত্র এবং জালজালিয়াতির মাধ্যমে উক্ত ম্যানেজার জোগসাজোগে একাধিক সিসি লোনের নাম করে অবৈধ ভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তৎকালিন শাখা ব্যবস্থাপক মো. আমিরুল ইসলাম মুঠো ফোনে বলেন,আমি উক্ত লোনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে মামলায় বিবাদী করেছি। এ ব্যাপারে বর্তমান শাখা ব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান জানান, রেজাউল ইসলাম সাহেব ম্যানেজার থাকা কালিন প্রদত্ত ঋনের মধ্যে বেশকিছু ঋনের কাগজপত্র ত্রুটি রয়েছে, যা ব্যাংকের ঋনের বিধি বিধান বহির্ভুত বলে প্রতিয়মান হয়। যার কারনে ব্যাংক বেশ কিছু ঋন খেলাপী হয়ে পড়েছে। সরোয়ার বিশ্বাসের ঋনটির বিপক্ষে দ্বায়ের কৃত মামলায় বর্তমানে বিবাদীগন জেল হাজতে রয়েছেন। ইতি পূর্বে একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি অভিযুক্ত হয়ে বরখাস্ত হয়েছিলেন। রুপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের এ.জি.এম রেজাউল ইসলাম মুঠো ফোনে বলেন, আমাকে কিছুদিন সময় দেন,আমি বিষয়টি মিমাংশার চেষ্টা করছি।এ ব্যাপারে রুপালী ব্যাংক ফরিদপুর শাখার প্যানেল এডভোকেট মোঃ আব্দুল হান্নান কর্তৃক ২৫/৫/২০১৫ ইং তারিখে রুপালী ব্যাংক আলফাডাঙ্গা শাখায় দেওয়া একটি প্রত্যায়ন পত্রে উল্লেখ করেন, আমার বর্ণিত বন্ধকী দলিল ও আম-মোক্তার নামায় স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ ভাবে সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল ইসলাম ৩১টি সিসি লোনে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা ।জানতে চাইলে রুপালী ব্যাংক ফরিদপুর শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. ওবায়দুল হক মুঠোফোনে (০১৭৩১৯৩১৮৭৮) বলেন, আমি অভিযোগের অনুলিপি কপি হাতে পেয়েছি, অভিযোগের তদন্তভার আমার কাছে আসলে আমি অতি দ্রুত আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করব। তিনি আরও বলেন, রেজাউল ম্যানেজার থাকাকালিন ৩১টা সিসি লোনের তদন্ত করে কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে তার মধ্যে হেড অফিস রেজাইলকে ২টি সিসি লোনের টাকা পরিশোদের দায়িত্বভার দিয়েছেন।