Connect with us

জাতীয়

রাত পোহালেই নারায়ণগঞ্জের ভোটের উৎসব

Published

on

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সবার দৃষ্টি এখন নারায়ণগঞ্জের এ নির্বাচনের দিকে। সেই সাথে অপেক্ষাও কে হাসবেন শেষ হাসি আইভী না সাখাওয়াত? অবশ্য উত্তরের জন্য এখনো অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা। নারায়ণগঞ্জে রাত পোহালেই শুরু হবে ভোটারদের ভোট দেওয়ার উৎসব। আর আশা করা যাচ্ছে সন্ধ্যার দিকেই বিভিন্ন কেন্দ্রের ফলাফল আসতে শুরু করবে। আর শেষ হাসির উত্তরও মিলে যাবে চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়ার পর।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে সেলিনা হায়াৎ আইভী, বিএনপি প্রার্থী হিসাবে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনসহ ৭ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া কাউন্সিলররাও লড়ছেন নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। মেয়র পদে সাতজন থাকলেও মূল আলোচনাই হচ্ছে আইভী ও সাখাওয়াতকে নিয়ে। চায়ের দোকান থেকে মুদি দোকান ‌এমনকি শপিং মলেও আলোচনা এই নির্বাচন। ভোটাররা কয়েক দিন ধরেই এই আলোচনা উৎসুক হয়ে শুনেছেন। কেউ কেউ ভালো মন্দ মন্তব্যও করেছ্নে। প্রার্থীরা এসেছেন ভোট চাইতে সবার সাথে কুশল বিনিময়ও করেছেন ভোটাররা।

নির্বাচনি প্রচরণা চালিয়ে দুই প্রধান প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন খান- দুজনই জয় প্রত্যাশা করছেন।

এদিকে, নির্বাচন বর্জন না করে শেষ পর্যন্ত নির্বচনের মাঠে থাকবে বলে আজ সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন বিএনপি দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী নির্বচনের জয় নিয়ে জানিয়েছেন, আমি উন্নয়নে বিশ্বাসী। আর মেয়র থাকা অবস্থায় যে উন্নয়ন করেছি, তার ধারাহিকতা রাখতে জনগণ আমাকে আবার নির্বাচিত করবেন।

একই আশায় স্বপ্ন দেখছেন বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেনও। তিনি জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নীরব ভোট রয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্যালটের মাধ্যমে তার প্রমাণ হবে। আমার বিশ্বাস, মানুষের অধিকার ফিরে আনতে ভোটাররা তা করবেন।

ভোটের পরিবেশও এখন পর্যন্ত শান্ত। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাই এখন পর্যন্ত ঘটেনি। পর্যান্ত নিরাপত্তা বলয়ও গড়ে তোলা হয়েছে। ৠাক পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে বিজিবিও।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন করতে সাড়ে ৯ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে নগরীর চাষাঢ়ায় চেকপোস্ট বসিয়ে ডগ স্কোয়াড নিয়ে তল্লাশি শুরু করেছে র্যাচব। এর আগে ২২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বুধবার র্যাুবের ২৭টি মোবাইল টিম মাঠে নেমেছে। প্রতিটি দলে থাকবেন ১২ জন করে।

প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশের তিনটি করে মোট ৮১টি টিম টহলে থাকবে। টিমের সদস্য সংখ্যা হবে ১২ জন। নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৈঠকে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। ভোটের সময় শিল্প পুলিশের দু’শ’ জন সদস্য জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগ দেবেন বলে ইসি কর্মকর্তারা জানান।

৫০ জন বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৫০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্বে রয়েছেন।

দুপুরে চাষাঢ়ায় র্যাণবের ভারপ্রাপ্ত উপ-অধিনায়ক নরেশ চাকমা সাংবাদিকদের জানান, নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে নির্বাচনী এলাকা। নির্বাচনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাচবের সাধারণ সদস্যদের পাশাপাশি ডগ স্কোয়াড ও বোম ডিসপোজাল ইউনিটও মাঠে থাকবে।

গত ১৯ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে নারায়ণগঞ্জে মোটরসাইকেল চলাচল ও বহিরাগতদের অবস্থান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় দু’দলই এটিকে তাদের প্রেস্টিজ ইস্যু হিসাবে দেখছে। এছাড়া নানা কারণে সমালোচনার মুখে পড়া কাজী রকিবউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিশন তাদের শেষ নির্বাচন কিভাবে শেষ করে সেটি নিয়েও রয়েছে সাধারণ মানুষের আলাদা দৃষ্টি।

নারায়ণগঞ্জ সদরের পাশাপাশি সিদ্ধিরগঞ্জ এবং বন্দর উপজেলা নিয়ে এই নির্বাচনী আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২ জন এবং নারী ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯ জন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৭৪টি। ভোটকক্ষের সংখ্যা ১৩০৪টি, অস্থায়ী ভোটকক্ষ ১২৬টি ।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *