Connect with us

দেশজুড়ে

লালমনিরহাটের গ্রাম গঞ্জে খেজুর রস সংগ্রহে গাছিরা ব্যস্ত সময় পাড় করছে

Published

on

রাহেবুল ইসলাম কালীগঞ্জ: লালমনিরহাট জেলা সদরের অদুরে ভাটিবাড়ি গ্রাম। এই গ্রাম প্রতিটি বাড়িতে কমবেশী খেজুরের গাছ আছে। প্রতিবছর শীতের মৌসুমের শুরুতে খেজুর রস সংগ্রহ করতে গাছিরা গাছ পরিচর্যা করতে হয়। শীত আসলে খেজুর গাছ চেঁচা ছিলা করতে হয়। চেঁচা ছিলার কাজটি বিশেষ কৌশলে করতে হয়। চেঁচা ছিলার ক্রুটি হলে অথবা মত বেশী হলে খেজুর রস সংগ্রহ হবে না। বরং খেজুর গাছ মরে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়। খেজুর গাছ চেঁচা ছিলার কাজে পারদর্শীদের স্থানীয় ভাষা গাছি বলা হয়।শীত আসছে। তাই খেজুর গাছ হতে রস সংগহের প্রস্ততি চলছে জোরেশোরে। জেলা সদরের অদুরে ভাটিবাড়ড়ি গ্রাম । এই গ্রামটিতে কয়েক শতাধিক খেজুর গাছ রয়েছে। খেজুর রসের চাহিদা অনেক। তাই এই রসের আর্থিক মূল্যও অনেক। শীতের সকালে ঠান্ডা খেজুর রস ভোজন পিঁপাসি মানুষের কাছে প্রিয়। খেজুর রসের মিষ্টি সুস্বাদ কে না ভালোবাসে।৫ ৭ বছর আগে জেলায় শীতের মৌসুমে নিপা ভাইরাসের প্রাদুরভাব দেখা দিয়ে ছিল। সেই সময় জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় নানা বয়সের প্রায় ৪২ জন নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সেই থেকে এই জেলায় খেজুর রস সংগ্রহ করে কাঁচা খেতে মানুষকে নিরুসাহিত করা হয়। তবে খেজুর রস গরম করে পরে ঠান্ডা করে খেলে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত ঝুঁকি থাকে না। নিপাভাইরাস বাদুরের লালা হতে ছড়ায়। নিপায় আক্রান্ত কোন বাদুর খেজুরের রস খেলে রসে নিপাভাইরাস সংক্রামিত হয়। তবে আশার কথা গত ৪ – ৫ বছরে জেলায় শীত মৌসুমে নিপা ভাইরাস আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি।কাঁচা খেজুর রসের চাইতে খেজুর রসের জেলী, পাটালি গুড়ের চাহিদা অনেক বেশী। খেজুর রস আগুনে জ্বাল দিয়ে রস ঘন করে গুড় তৈরী করা হয়। এই গুড় দিয়ে সারা বছর মিঠা পায়েশ তৈরী করা যায়। তবে শীত মৌসুমে অগ্রাহন মাসে পুরো দমে নতুন ধান কাঁটা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়। তখন গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে নানা রকম পিঠা পায়েশ তৈরী ধুম পড়ে যায়। গ্রাম মানুষ নিজেরাই তৈরী করে খেজুর রস ও খেজুর গুড় দিয়ে পিঠা। সেই পিঠা নিজেরা খায়। অন্য আত্মীয় স্বজনদের খাওয়ায়। অনেকে খেজুর রসের পিঠা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। গ্রাম বাংলারার ঐতিহ্যের প্রতীক খেজুর গাছের রস আহরণ। শীতের শুরুতে খেজুর গাছ পরিষ্কার করা হয়। ডালপালা কেটে পরিষ্কার করা হয়। এরর পর কয়েক দফায় খেজুর গাছ চেঁচে ফেলা হয়। তারপর বসানো হয় বাঁশের কঞ্চির নল। এই নল দিয়েই সারারাত ধরে খেজুরগাছ থেকে মাটির হাঁড়িতে ফোঁটায় ফোঁটায় খেজুর রস জমা হয়। পুরো শীতকাল চলবে খেজুর রস সংগ্রহের কাজ। গ্রাম গ্রাম তৈরি হবে খেজুরের গুড় ও পাটালি। রস জ্বালিয়ে ভিজানো পিঠা ও পায়েস খাওয়ার ধুম পড়বে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে। খেজুর রস দিয়ে তৈরী হবে দানা, ঝোলা ও পাটালি গুড়। খেজুর গুড়ের স্বাদ ও ঘ্রাণেই একটু আলাদা হয়ে থাকে। রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি নেই।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *