Connect with us

জাতীয়

আত্মঘাতী কর্মসূচি না থাকলে ফলাফল আরো ভাল হতো : প্রধানমন্ত্রী

Published

on

প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র পরীক্ষার সময় আত্মঘাতী কর্মকান্ডে লিপ্ত না হলে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আরো ভাল হতো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময় বিএনপি-জামায়াত চক্র হরতাল ও অবরোধ ডেকে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের মতো নৃশংস অপরাধে জড়িত ছিল।

তিনি বলেন, পরীক্ষার সময় তারা এ ধরনের আত্মঘাতী কর্মকান্ড না চালালে এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আরো ভাল হতো। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজ সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ১০ শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তরকালে শেখ হাসিনা একথা বলেন।

শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং ১০ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময় বিএনপি-জামায়াতের লাগাতার হরতাল ও অবরোধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় বাংলাদেশে বড় ধরনের সমস্যা চলছিল। যা ছিল মানব সৃষ্ট সমস্যা। বিএনপি-জামায়াত ওই দুই পরীক্ষা শুরুর আগে হরতাল দিয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষা যখন শুরু হলো তখন তারা হরতালের সঙ্গে অবরোধ কর্মসূচিও ঘোষণা করলো। এরপর তারা তথাকথিত আন্দোলনের নামে গাড়ি জালিয়ে মানুষ পুড়ে হত্যা শুরু করলো।

শেখ হাসিনা বলেন, এটা তারাই করেছে যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চায়, শিক্ষার কণ্ঠরোধ করতে চায় এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এটা তাদেরই চক্রান্ত ছিল যারা ক্ষমতায় থাকার সময় মানুষের উপর অত্যাচার-জুলুম করেছে, দুর্নীতি ও লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাঠিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেয়া ও দেয়া খুবই কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আমাদের ছেলে-মেয়েরা এসব বাধা অতিক্রম করে পরীক্ষা দিয়েছে এবং সফল হয়েছে-এটি এক বিরাট সাফল্য।

তিনি শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য শিক্ষক, শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, এবার যারা পাস করতে পারেনি, তারা আগামীতে ভাল লেখাপড়া করে সফল হবে। শিক্ষাখাতের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অনুসরণে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

শিক্ষা ছাড়া কোন জাতিই উন্নতি করতে পারে না-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশুদের লেখা-পড়ায় আগ্রহী করা, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষিত সমাজ গড়ে তোলাও আমাদের লক্ষ্য। এ জন্য স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর তাঁর সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা সম্প্রসারণে গুরুত্বারোপ করে এবং ওই সময় দেশে ১২টি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে কয়েকটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।

দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে শিক্ষিত, দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রজন্মের কোন বিকল্প নেই- একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে শিশুদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তিক আধুনিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতির বাস্তবতা মনে রেখেই কৃষি শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিতেই হবে, পাশাপাশি অর্থনীতিভিত্তিক জনশক্তিও গড়ে তুলতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর সরকার দেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করছে। এসব শিল্পাঞ্চলে বিপুলসংখ্যক দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। পরে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনা ও পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশকে ক্ষুধা ও দরিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্ত করে এবং স্বাধারণ মানুষের মুখে হাঁসি ফুটিয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে এবং বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে আমরা। এলক্ষ্য বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে তাদের বিচার চলছে এবং রায়ও বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর সেনা একনায়ক জিয়াউর রহমান সামরিক ফরমান জারি করে এই বিচার বন্ধ করেন। তিনি (জিয়াউর রহমান) কারাগার থেকে খুনি ও ধর্ষকদের মুক্তি দিয়েছেন এবং তাদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়েছেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *