Connect with us

ঢাকা বিভাগ

ফরিদপুরে ভুয়া শিক্ষকের দাপটে নিয়োগ বঞ্চিত হলো ২৪ প্যানেল ভুক্ত শিক্ষক

Published

on

ফরিদপুরফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলায় নব সরকারীকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৪ জন ভুয়া শিক্ষকের দাপটে নিয়োগ বঞ্চিত হলো ২৪ জন প্যানেল ভুক্ত শিক্ষক। প্যানেলে মেধাক্রমে থাকার পরও রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে এ সব হতভাগাদের। জানা যায়, রেজিষ্টার্ড বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ৪ টি পদ ছিল। ২০১৩ সালে সরকার বিদ্যালয় গুলোকে সরকারী করনের ঘোষনা দেয়। উক্ত বিদ্যালয় গুলোতে ৫ টি পদ দেখাইয়া ২০০৯ সালে ভাঙ্গার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ২৪ জন ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দেখায় একটি চক্র। এদের নিকট থেকে হাতিয়ে নেয় জন প্রতি প্রায় ৪/৫ লক্ষ টাকা। অথচ নিয়োগকৃত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি কিছুই জানে না। থানমাত্তা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেখানো হয়েছে মুকসুদপুর উপজেলার মোহাম্মদ আলীর পুত্র মোস্তাফিজুর রহমানকে, অথচ উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলহাস মাতুব্বর জানান মোস্তাফিজকে সে কখনো দেখেই নাই। পশ্চিম পাতরাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজিয়া সুলতানাকে নিয়োগ দেওয়া হলেও উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম মাতুব্বর এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।এ ভাবে ভাঙ্গা থানার ২৪টি বিদ্যালয়ে ২৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেখানো হয়েছে যাদের সংস্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান গন চিনেন না। এ ব্যাপারে ২৪টি বিদ্যালয়ের প্রধান গন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত দিয়েছেন যে তারা ভুয়া শিক্ষকদের সম্পর্কে কিছুই জানেন না । এ সব শিক্ষক নিয়োগ দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি প্রতারক চক্রের হোতা হাজরাকান্দা গ্রামের আঃ রহমানের ছেলে আঃ জব্বার মিয়া। বেতন করার জন্য বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সই জাল করে কাগজপত্র প্রেরন করেছেন বিভিন্ন দপ্তরে। ভুয়া ঐ ২৪ জনের মধ্যে মুস্তাফিজুর রহমান,জিন্নতুন্নেছা,আয়শা আক্তার,রাজিয়া , শিখা খানম , আলেয়া ও ইমারতের নামে সোনালী ব্যাংকে ১৪৭৪৪৭০ টাকার বিল করে জমা দেন যার বিল নং-১৮ তারিখ ২০-৭-১৫ এল এস সি নম্বর-২১১ , তারিখ ২২-৭-১৫। এ ছাড়াও এই সময় নিমা খানম ,নাজমুল হক ,ফেরদৌসী ,শাহনাজ ,রুমা আক্তার ও আবুল কালামের নামে ১১৯১৯১০ টাকার বিল করে সোনালী ব্যাংকে জমা দেন যাহার বিল নং- ১৯ ,তারিখ ২০-৭-১৭, এল এস সি নম্বর-২১০ ,তারিখ ২২-৭-১৫। তখন এজি অফিসার আবুল হোসেন এবং সোনালী ব্যাংকের অফিসার প্রমদ চন্দ্র বালার সর্তকতায় বিল দুটি তুলতে পারেনি এ প্রতারক চক্র। এ সব ভুয়া শিক্ষকদের বৈধ করার নানা তৎপরতা চালাচ্ছে প্রতারক চক্রটি বলে জানান ভাঙ্গা থানার সাবেক রেজি ঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্যানেল ভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দ। তারা হাইকোর্টে রিট করেছে বলেও জানা যায়।এ ব্যাপারে প্যানেল ভুক্ত শিক্ষক জিয়াউর রহমান ও ঝর্না আক্তার অভিযোগ ও হতাশার শুরে জানান হাইকোর্টে মামলা করে আমরা রায় পেয়েছি কিন্ত অবৈধ ভাবে ২৪ জন নিয়োগ পেলে আমরা কোথায় নিয়োগ পাব।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৩ বিদ্যালয় গুলো সরকারী ঘোষনার পর একটি প্রতারক চক্র ভুয়া কাগজ দেখিয়ে ২০০৯ সালে ২৪ জন শিক্ষককে ভাঙ্গার বিভিন্ন স্কুলে নিয়োগ দেখিয়েছে যাহা উপজেলা শিক্ষা অফিস জানে না।এ ব্যাপারে ২৪টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট এই মর্মে প্রত্যয়ন দিয়েছে যে তারা নিয়োগকৃত শিক্ষকদের চিনেন না। তারা কোনদিন হাজিরা খাতায় ও সই করেননি। এ সব তথ্য গুলো আমরা আমাদের উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন একটি প্রতারক চক্র ভুয়া শিক্ষক নিয়োগের নামে শিক্ষার পরিবেশকে কুলশিত করার চেষ্টা করছে। অচিরেই তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে।
গত ৬ জুন সরকার নব সরকারীকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শূন্য পদে প্যানেল থেকে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্বান্ত নেয়। ৫ম পদ ধরে ভাঙ্গাতে ৪৭ পদ শূন্য আছে বলে জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে ২৩ জনের ফলে প্যানেল ভুক্ত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোপ আর হতাশা বিরাজ করছে। বাকী ২৪টি পদে শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন আমার নিকট ২৩ টি পদের তালিকা চাওয়া হয়েছে আমি সেটা তৈরী করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠিয়েছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শিব পদ দে জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নির্দেশ এসেছে ২৪ টি পদে নিয়োগ স্থগিত রাখার জন্য। তাহলে কি ভুয়াদের দাপটে নিয়োগ বঞ্চিত হবে প্যানেল ভুক্ত শিক্ষকগন , দূর্নীতির নিকট পরাজিত হবে সত্য,টাকার নিকট বিক্রি হবে আদর্শ এ প্রশ্ন ভাঙ্গাবসীর। নিয়োগ বঞ্চিত প্যানেল ভুক্ত কয়েক যুবক বলেন স্থগিত আদেশ কি সত্যি অধিদপ্তর দিয়েছে নাকি এটা নিয়োগ বানিজ্য কে জানে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *