Connect with us

জাতীয়

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের বেতন-ভাতা হলো দ্বিগুণ

Published

on

pm_rরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি বাড়িয়ে পৃথক তিনটি বিল পাস করেছে জাতীয় সংসদ। গতকাল বুধবার সংসদের অধিবেশনে তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল দুটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন সংসদীয় কার্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। আর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. আনিসুল হক উত্থাপন করেন সংসদ প্রধান স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিলটি। পরে বিল তিনটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে পাস হওয়া বিল তিনটি হচ্ছে- ‘রাষ্ট্রপতির (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬,’ ‘প্রধানমন্ত্রীর (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’ এবং স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’। এ ছাড়াও আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রী-এমপিদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত ‘মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’ এবং ‘সংসদ সদস্যদের (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিল-২০১৬’ পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত ২ মে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী এবং এমপিদের বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি বৃদ্ধি করার প্রস্তাব সম্বলিত ৫টি পৃথক বিলের ওপর আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রিপোর্ট ৫টি জাতীয় সংসদে পৃথকভাবে উপস্থাপন করেন। রিপোর্টে বিল ৫টি সংশোধিত আকারে পাসের সুপারিশ করা হয়েছিল। কমিটির সুপারিশসহ বিল তিনটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে বিরোধী দলের সদস্যরা আপত্তি জানান। তারা ওই বিলগুলো পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।

রাষ্ট্রপতির (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিলে রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া সুবিধাদি এক লাখ ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিলে প্রধানমন্ত্রীর বেতন ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সুবিধাদি ও ভাতা বৃদ্ধি করে যথাক্রমে ৫০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ টাকা, এক হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ হাজার টাকা, এক লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিলগুলোর উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ায় এবং দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মানননীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা সামঞ্জস্য রক্ষা করে পুণঃনির্ধারণের লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনের অধিকতর সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিল উপস্থাপন করা হলো।

ওই বিলের প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নতুন হারের এই বেতন কার্যকর হয় গত বছরের পহেলা জুলাই থেকে। তবে ভাতা কার্যকর হবে চলতি বছরের পহেলা জুলাই থেকে। এর আগে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল।

সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রপতি বিমানে ভ্রমণ করলে তার বীমার জন্য আগের ১৫ লাখ টাকার পরিবর্তে আইন সংশোধনের পর ২৭ লাখ টাকা হারে তা পাবেন। তবে রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাধীন তহবিলে আগের মতোই দুই কোটি টাকা থাকবে।

সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর বেতন ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। সুবিধা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি বাড়িতে থাকলে প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ পাবেন ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। আইন সংশোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর বিমান ভ্রমণের বীমার সীমা ১৪ লাখ টাকার পরিবর্তে ২৫ লাখ টাকা হারে পাবেন। এছাড়া ঢাকার বাইরে গেলে প্রধানমন্ত্রীর দৈনিক ভাতা এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা ও স্বেচ্ছাধীন তহবিলের আকার এক কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকা করা হয়েছে।

স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বেতন-ভাতা পারিতোষিক বিশেষ অধিকার ইত্যাদি বৃদ্ধির প্রস্তাব সম্বলিত স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের (বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধন) বিলে স্পিকারের বেতন ৫৭ হাজার ২০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ ১২ হাজার টাকা, ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৮ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৩ হাজার টাকা, বিমানযোগে ভ্রমণকালে বীমা কভারেজ ১০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৬ লাখ টাকা, দৈনিক ভাতা এক হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিল ১০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১১ লাখ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া ডেপুটি স্পিকারের বেতন ৫৩ হাজার ১০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ ৫ হাজার টাকা, ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৬ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০ হাজার টাকা, বিমানযোগে ভ্রমণকালে বীমা ৫ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৮ লাখ টাকা, দৈনিক ভাতা ৭৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে দুই হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিল ৮ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে।বিডিপি/আমিরুল

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *