Connect with us

খেলাধুলা

লর্ডসের লর্ড হওয়ার পথে অস্ট্রেলিয়া

Published

on

স্পোর্টস ডেস্ক:
রেকর্ডটাকে অদ্ভুতই বলতে হবে। এমন একটি রেকর্ড, যেটা কেউ করতে চাইবে না। কেউ কি চাইবে সেঞ্চুরিটা না করে তার কয়েক রান আগে আউট হয়ে যেতে। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হবে যেন, অ্যালিস্টার কুকের এই রেকর্ড গড়াটা খুব প্রিয়। না হয় আর কত ‘নার্ভাস নাইন্টিজে’ আউট হবেন ইংলিশ অধিনায়ক। সাত বার তো হয়ে গেল। জিওফ বয়কটকে ছাড়িয়ে গিয়ে নিজের দেশে নতুন রেকর্ড গড়লেন। এবার কি শচীন টেন্ডুলকারের বিশ্ব রেকর্ড ছোঁয়ার দিকে এগোচ্ছেন তিনি। শনিবার বেন স্টোকসের সঙ্গে ১৪৫-এর জুটি গড়ার পর সেঞ্চুরি থেকে মাত্র চার রান দূরে থাকা ইংলি অধিনায়কের স্ট্যাম্প যখন মিচেল মার্শ ছিটকে দিলেন, প্রশ্নটা উঠে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু বর্তমানে ইংল্যান্ড ক্রিকেটমহলে কুকের ‘নার্ভাস নাইন্টিজ’ চর্চার চেয়েও যে প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক দেখাচ্ছে তাহলো, ইংল্যান্ডের লর্ডস টেস্ট বাঁচানোর সম্ভাবনা আর কতটা পড়ে।
তৃতীয় দিন শেষে ইংল্যান্ড আপাতত অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ৩৬২ রান দূরে। ২৫৪ রানের লিড নিয়ে যারা দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছে। এবং মাইকেল ক্লার্কদের দ্বিতীয় ইনিংসের একটা উইকেটও ফেলা যায়নি। হাতে এখনও পুরো দু’টো দিন। সাড়ে চারশো থেকে পাঁচশোর লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ে দিলেও কিন্তু অ্যালিস্টার কুকের টিমকে মহাকাব্যিক কিছু করতে হবে। আর লিড এখনই এতটা মগডালে যে, মাইকেল ক্লার্ক ইংল্যান্ডকে ফলো অন কেন করালেন না, এ জাতীয় প্রশ্নও কেমন যুক্তিহীন দেখাচ্ছে। লর্ডস কমেন্ট্রি বক্সে দুই অস্ট্রেলীয় সাবেক রিকি পন্টিং এবং শেন ওয়ার্ন কিছুতেই একমত হতে পারছিলেন না ফলোঅন থিওরি নিয়ে। বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ফলোঅনের বিপক্ষে। কিংবদন্তি লেগস্পিনার আবার ক্রমাগত সওয়াল করে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত পন্টিংয়ের যুক্তিই জিতল! যে যুক্তি বলে, ফলোঅন করিয়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরার ন্যূনতম সুযোগ দেওয়ারও যুক্তি নেই। বরং আবার ব্যাট করে রানের এভারেস্ট ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া ভাল। যাতে স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালেই দমবন্ধ হয়ে যায়। আর ফলোঅন করানো মানেই জয়, পরিসংখ্যানও সেটা বলে না। অ্যাসেজে এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া যে ২৫বার ইংল্যান্ডকে ফলোঅন করিয়েছে, তার মধ্যে ১৮ বার তারা জিতেছে, পাঁচ বার ড্র হয়েছে আর হেরেছে দু’বার। এবং লর্ডসের বাইশ গজ ও ইংলিশদের ব্যাটিংয়ের যা অবস্থা, তাতে পঞ্চম দিনের উইকেটে ক্লার্কের ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠানোর ইচ্ছে হলে দোষের কিছু নেই। বেন স্টোকস ৮৭ করে আউট হওয়ার আগে বা পরে ইংলিশদের প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বড় যে পার্টনারশিপটা হল, তা ৫৬-র। কুক ও মইন আলির (৩৯)। যিনি রিভিউ চেয়েও নিজের এলবিডব্লিউ বাঁচাতে পারলেন না।
শুক্রবার চায়ের বিরতির পর থেকে এ দিন চায়ের আগে পর্যন্ত খেলে কুক (৯৬) যখন আউট হন, তখন ইংল্যান্ড ২৬৬-তে। হাতে তিন উইকেট। কুকের মতো স্টোকসও মার্শের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যাওয়ার পর জস বাটলার ক্যাপ্টেনের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও বেশ নড়বড়ে ছিলেন। জনসনের বলে একবার খোঁচা দিলেও তৃতীয় আম্পায়ার রিপ্লেতে দেখতে পান উইকেটকিপার পিটার নেভিল ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে অসাধারণ ক্যাচ নেওয়ার আগেই বল মাটি ঘেঁষে যায়। তবে তার একটু পরেই ফের একই ভাবে কট বিহাইন্ড হওয়ার পর আর ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকেননি ইংলিশ উইকেটকিপার। যাদের ভরসায় ইংল্যান্ডকে ফের ব্যাট করতে পাঠালেন না অজি অধিনায়ক, সেই হ্যাজলউড ও জনসন তিনটি করে ও মার্শ দু’টি উইকেট নেন। ইংল্যান্ডের দুই সেরা ব্যাটসম্যান তারই শিকার। আর একটা মজার ব্যাপারও ঘটল এই টেস্টে। অস্ট্রেলিয়ার তিন মিচেলই এই প্রথম একসঙ্গে কোনও টেস্ট ইনিংসে উইকেট পেলেন। কোনও সন্দেহ নেই যে তথ্যটা ইংরেজদের সুখ দেবে না। বরং তারা আরও বিমর্ষ হয়ে পড়তে পারেন, জনসনদের সঙ্গে লড়াইয়ে তাদের পেস বোলারদের দশা দেখলে। দ্বিতীয় ইনিংসে একশো পার করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। অথচ ব্রড-অ্যান্ডারসনরা একটা উইকেট ফেলতে পারেননি। একশো তুলতে পঁচিশ ওভারও লাগেনি এবং দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ১০৮-০। ক্রিস রজার্স ৪৪ ও ডেভিড ওয়ার্নার ৬০ রানে অপরাজিত।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *