লালমনিরহাটে কৃষি কর্মকর্তার অফিসে প্রেমিকার অনশন

লালমনিরহাট সংবাদদাতা: প্রেমিকাকে প্রত্যাখ্যান করে চাকুরীর বদলী নিয়েও রক্ষা হলো না লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কুমার প্রনয় বিষাণ দাশের। অবশেষে বিয়ের দাবিতে তার অফিসেই অনশন করছেন প্রেমিকা।
প্রশাসন আর জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপেও প্রেমিকার অনশন যেন ভাঙ্গছে না। তাই উপজেলা প্রশাসন বাধ্য হয়ে উভয়ের অভিভাবকদের ডাকা হয়েছে। এদিকে প্রেমিককে বাচাঁনোর চেষ্টায় কৃষি অফিসারের গাড়ীতে করে পালানোর চেষ্টা করেছে কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম ।
জানা গেছে, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ কুমার প্রনয় বিষাণ দাশ কিছুদিন আগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা থেকে বদলী হয়ে কালীগঞ্জে যোগদান করেছেন।
তিনি পূর্বের কর্মস্থলে থাকাবস্থায় সেখানকার জনৈক স্কুল শিক্ষকের উচ্চ শিক্ষিতা মেয়ে পদ্মকলির (ছদ্মনাম) সাথে দু’বছর আগে বিয়ের প্রলোভনে প্রেম থেকে শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। গোত্রিয় বৈষম্যের কারনে প্রেমিকার পরিবারের পক্ষ থেকে আপত্তি উঠে।
বিষয়টি নিয়ে একাধিক সালিশ-বৈঠক হয় সুন্দরগঞ্জ-গাইবান্ধায়। কিন্তু, কোন রকম সুরাহা ছাড়াই কৌশলে কালীগঞ্জ উপজেলায় বদলী নিয়ে চলে আসেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ কুমার প্রনয় বিষাণ দাশ।
প্রেমিকা পদ্মকলি গত একমাস আগে বিষয়টি কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আলমের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু কোন সুরাহা না পেয়ে নিরুপায় হয়েই পদ্মকলি বৃহস্পতিবার(১১ আগষ্ট) দুপুরে প্রেমিক কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ কুমার প্রনয় বিষাণ দাশের কার্যালয়ে ঢুকে বিবাহের দাবীতে আমরণ অনশন শুরু করেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় প্রেমিক বিষাণ দাশ কতিপয় দালাল চক্রের মাধ্যমে মেয়েটিকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করলে গাড়ি আটকান প্রেমিকা পদ্মকলি।
বিষয়টি জানাজানি হলে থানা পুলিশ এসে মেয়ে ও ছেলেকে হাজতে নিতে চাইলে প্রেমিক কৌশলে স্থানীয় আপোষ করার প্রস্তাব দেন। মেয়েটি তাড়িয়ে দেয়ার নানা নাটকিয়তার পর অবশেষে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহম্মদের নজরে এলে তিনি উভয় পক্ষের অভিভাবকদের তলব করেন। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কোন সুরহা না হওয়ায় প্রেমিকার পদ্মকলি তার অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রেমিকা পদ্মকলি কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে আমাকে বিয়ে করবেন না হয় তার নামে মামলা করবো । অথবা আমি নিজেই জীবন দিয়ে দিবো। সে আমাকে নিয়ে যা করেছে সেটি বলার মত না।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, উভয়ের অভিভাবকের উপস্থিতিতে বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম স্থানীয় ভাবে আপোষের কথা বলায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয় নি। মেয়েটি অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আলম জানান, মেয়েটির অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে কৃষি অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। বর্তমান বিষয়টি নিয়ে উভয়ের অভিভাবককে ডাকা হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুজামান আহম্মেদ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে দু’জনেই সম্পর্কেও কথা স্বীকার করেছে। তাই উভয়ের অভিভাবকদের ডাকা হয়েছে। তারা এলেই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।