বিনোদন
নিজে মরে বাঁচিয়ে দিয়ে গেলেন ৩৫৯ জনকে
বয়স তাঁর খুব বেশি ছিল না। মাত্র ২৩। বাবা মায়ের আদরের মেয়ে ছিল লাডো। ছোটোখাটো মডেলিং করত সে। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন ছিল আকাশে ওড়ার। সেই স্বপ্ন লাডো বাস্তবায়িত করেছিল। এয়ার হোস্টেসের চাকরি পেয়েছিল সে। ক্যারিয়ারে ধীরে ধীরে উত্তরণ হল। নীরজা ব্যানট হলেন সিনিয়র ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট। এই পরিচয়েই তিনি উঠেছিলেন প্যান AM ফ্লাইট ৭৩-এ।
৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬। করাচিতে সকাল ৬টা নাগাদ একটি সিকিউরিটি ভ্যান থেকে বিমানে উঠল চারজন নিরাপত্তারক্ষী। গায়ে তাঁদের নিরাপত্তারক্ষীদের ইউনিফর্ম। কিন্তু বিমানে উঠেই নিজমূর্তি ধরল সেই চারজন। ঘোষণা করল প্যান AM ফ্লাইট ৭৩ হাইজ্যাক করা হয়েছে। তারা হাইজ্যাকার। মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে তাদের কথা শুনতে বাধ্য করল পাইলটকে। এমন অবস্থায় অন্য সকলের মতো স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়েছিলেন নীরজা ব্যানট- সিনিয়র ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট। কিন্তু তাঁর কাজ তাঁর কাছে ছিল অত্যন্ত প্রিয়। কর্তব্য বোধের তাড়নায় নীরজা আস্তে আস্তে নিজের কাজ শুরু করেন। কিন্তু হাইজ্যাকাররা শুনবে কেন? অতএব বন্দুকের নল ঠেকল তাঁর মাথাতেও। কিন্তু তাতে একটুও ঘাবড়াননি নীরজা। ততক্ষণে হাইজ্যাকাররা তাদের খেল দেখাতে শুরু করে দিয়েছে। কেড়ে নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের পাসপোর্ট। নীরজা বুদ্ধি দিলেন, যাঁদের পাসপোর্ট অবশিষ্ট আছে, তাঁরা যেন সেগুলি সিটের নিচে লুকিয়ে ফেলেন। এরপর নীরজা অন্য ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টডের সঙ্গে মিলে খুলে ফেলেন বিমানের একটি দরজা। সেখান দিয়ে সমস্ত যাত্রীদের বের করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। নীরজার চেষ্টা ফলপ্রসু হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিমানের কুড়ি জন যাত্রী হাইজ্যাকারদের হাতে প্রাণ হারান। মারা যান নীরজা নিজেও।
সাহসীকতার জন্য তাঁকে মরণোত্তর অশোকচক্র দেয় ভারত সরকার। সাহসিকতার জন্য তিনি সম্মানিত হন পাকিস্তান ও মার্কিন মুলুকেও। সেই নীরজা ব্যানটের জীবনকাহিনি এবার আসছে বড়পর্দায়। নীরজার চরিত্রে অভিনয় করছেন সোনম কাপুর। সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে “নীরজা”। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রিলিজ় করবে ছবিটি।